কার্ল মার্কস ও ফেড্রিক এঙ্গেলস তাদের রচিত ‘কমিউনিস্ট ইশতেহার’ শুরু করেছিলেন এই প্রথম বাক্যটি দিয়ে- ‘ইউরোপ ভূত দেখেছে, কমিউনিজমের ভূত!’ ইউরোপের সর্বত্র সবকিছুতেই ‘কমিউনিজমের’ ছায়া খুঁজে পাওয়া তখন একটি ফ্যাশন ও অজুহাতে পরিণত হয়েছিল। সম্প্রতি সমাপ্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাবার্তা ও কর্মকা- দেখেশুনে কমিউনিস্ট ইশতেহারের সেই বাক্যের প্রতিধ্বনি করে বলতে হয়- আজ ‘আমেরিকা ভূত দেখেছে, কমিউনিজমের ভূত!’
ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি যে, আমাদের দেশে কেউ যদি ‘গরিব মানুষের প্রতি দরদি হয়’ কিংবা যদি ‘বিলাসিতা পরিহার করে সাধারণ মানের জীবনযাপন করে’ অথবা যদি তার ‘নিজের হাতে নিজের কাজ করার অভ্যাস থাকে’, অথবা যদি সত্যবাদী-দানশীল-যুক্তিবাদী-শ্রমের প্রতি মর্যাদাশীল ইত্যাদি হয়- তা হলে অনেক সময় বলা হয় যে, সেই ব্যক্তির মধ্যে এক ধরনের ‘কমিউনিস্ট-কমিউনিস্ট’ ভাব আছে। একইভাবে সব দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শাসক-শোষকরা যে কোনো মন্দ কাজের পেছনে সুযোগ পেলেই ‘কমিউনিস্টদের হাত খুঁজে পায়।’
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ও সে দেশ থেকে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসানের পর পুঁজিবাদের পদলেহী প-িতরা ঘোষণা করেছিল যে, ‘সমাজতন্ত্রের দিন শেষ হয়ে গেছে।’ তার পর ৩ দশক পার না হতেই শুধু ইউরোপ বা আমেরিকা নয়, আজ ‘গোটা পুঁজিবাদী বিশ্বই ভূত দেখেছে, কমিউনিজমের ভূত!’
বস্তুত সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির জন্য ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘মার্কসবাদ’ মোটেও দায়ী ছিল না। বরং যে ‘মার্কসবাদের’ মতাদর্শগত ভিত্তির ওপর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারণা রচিত তার উপলব্ধি ও অনুসরণে কিছু মৌলিক ধরনের ত্রুটি ঘটাটাই ছিল সেজন্য প্রধানত দায়ী। এ কথা অনুধাবন করা প্রয়োজন যে, মার্কসবাদ আসলে গতানুগতিক অর্থে একটি শাস্ত্রবদ্ধ ‘মতবাদ’ নয়। এটা কোনো কেতাবি আদর্শ কিংবা কতগুলো অনড়-অচল ফর্মুলার সমাবেশ নয়, তত্ত্বচর্চার শেষ কথা নয় এবং চিন্তাজগতের বদ্ধ জলাশয় নয়। মার্কসবাদ একটি জীবন্ত মতাদর্শ। কিন্তু মার্কসবাদের অন্তর্নিহিত সজীবতা ও সৃজনশীলতার এই মর্মকথাটি ‘মার্কসবাদী’ বলে দাবিদারদের অনেকের দ্বারা ক্ষমাহীনভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। এজন্য দোষ কার্ল মার্কসের অথবা লেনিনের নয়। দোষ মার্কস-লেনিন উত্তরকালীন মার্কসবাদের অনুসারীদের।
মার্কসবাদী বলে দাবিদারদের অনেকে নানাভাবে মার্কসবাদকে, অনেক পরিমাণে, একটি পরম সত্য ধারণকারী, শাস্ত্রবদ্ধ, কেতাবি মতবাদে পরিণত করে রেখেছিলেন। ট্র্যাজেডিটা এখানেই যে, যেখানে মার্কসবাদ সুস্পষ্ট ও বলিষ্ঠভাবে ‘মতান্ধতার’ ধারণাকে নাকচ করে, সে নিজেই তার শিকার হয়ে পড়েছিল। ভাবনাটা অনেকটা এভাবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল যে, মার্কসের সঙ্গে সঙ্গেই তত্ত্বচর্চার কর্তব্য সম্পন্ন হয়ে গেছে। অবশ্য কেউ কেউ লেনিন, স্টালিন, মাও সেতুং, শিবদাস ঘোষ প্রমুখের নাম এর সঙ্গে যুক্ত করে থাকেন। এ ধরনের প্রয়াস এরূপ ধারণারই জন্ম দেয় যে, কতগুলো ‘একবারে উদ্ভাবিত’ তত্ত্বের প্রস্তরীভূত সমাহারের উপাদানই হলো মার্কসবাদী মতাদর্শের ভিত্তি। এ ধরনের ধারণা বস্তুত মার্কসবাদের ডায়ালেকটিক ভাবনাকে নাকচ করে এবং তত্ত্বচর্চার ক্রমাগত প্রয়াসকে নিরুৎসাহিত করে। অথচ মার্কসবাদ অনুসারে কখনই তত্ত্বচর্চার ও তত্ত্বের নবীকরণের অনন্ত প্রয়াস থেকে বিরত থাকার যুক্তি থাকতে পারে না।
তত্ত্ব ও প্রয়োগের আন্তঃসম্পর্কের বিশ্লেষণ করে মার্কস এটিই দেখিয়েছেন যে, যেহেতু প্রয়োগ ক্রমাগতভাবে বিকশিত হচ্ছে এবং যেহেতু বিশ্বব্রহ্মা- অনন্ত ও নিরন্তর বিকাশমান, সে কারণে তার সম্পর্কে লব্ধ জ্ঞান কখনই পূর্ণ হয়ে উঠবে না। তাই তত্ত্বের বিকাশও অনন্ত প্রবহমান হতে বাধ্য। মার্কসবাদের এই মর্মকথাটির পূর্ণ উপলব্ধি ও অনুসরণে ঘাটতি ছিল। ফলে ক্রমাগত তত্ত্বচর্চার মাধ্যমে তত্ত্বের ও তাত্ত্বিক অনুসিদ্ধান্তের ক্রমনবায়নের অত্যাবশ্যক কাজটি অবহেলিত থেকেছে।
সমস্যা কেবল মার্কসবাদের প্রকৃত মর্মবাণী অনুধাবন ও অনুসরণে ত্রুটি এবং মার্কসবাদী তত্ত্বচর্চার আবশ্যিক ধারাবাহিক কাজকে ক্ষমাহীনভাবে অবহেলা করার কারণেই ঘটেনি। সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কেও কিছু গুরুতর ভ্রান্ত ধারণা দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কারণেও। ৭০ বছরের ‘বিদ্যমান সমাজতন্ত্রের’ বাস্তব অভিজ্ঞতা ও পাশাপাশি মার্কসবাদের নিরিখে ‘সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদের’ মূলগত ধারণাকে বিবেচনা করলে এসব ভ্রান্তির উপাদানগুলো খুঁজে পেতে খুব কষ্ট হওয়ার কথা নয়। এ কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজতন্ত্রের আন্দোলনকে সামনের দিকে অগ্রসর করার জন্য এটি একান্তভাবে প্রয়োজন।
সাধারণভাবে এ কথা বলা যায় যে, এতদিন বহুলাংশে সমাজতন্ত্র সম্পর্কে একটি সহজ সরল ‘মডেল’ভিত্তিক ধারণা অনুসরণ করা হয়েছিল। স্থান-কালভেদে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য অনুসৃত হলেও কতক বিচারে ৭০ বছর ধরে প্রায় আগাগোড়াই একই সাধারণ ‘সোভিয়েত মডেলের’ গ-ির মধ্যে সমাজতন্ত্র বিনির্মাণের কাজ আবদ্ধ হয়েছিল। সেই ‘মডেলটিকেই’ স্থান-কালের বিবেচনার ঊর্ধ্বে সাধারণভাবে পরম (ধনংড়ষঁঃব) বলে জ্ঞান করা হয়েছিল। সমাজতন্ত্রের সর্বজনীন (ঁহরাবৎংধষ) বৈশিষ্ট্য ও তার জাতীয় বিশেষ (হধঃরড়হধষ ংঢ়বপরভরপ) বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হলেও এই দুইয়ের ডায়ালেকটিক সম্পর্ক ও সামগ্রিকভাবে তার গতিময়তার (ফুহধসরংস) বিষয়টির প্রতি যথাযথ দৃষ্টি দেওয়া হয়নি। ফলে একদিকে যেমন বাস্তব প্রয়োগের অভিজ্ঞতা থেকে ভুল-ত্রুটিগুলো যথাসময়ে ও যথাযথভাবে সংশোধন করে অগ্রসর হওয়ার কর্তব্যটি অবহেলিত থেকেছিল। এবং সেসব ভুল-ত্রুটিগুলো ক্রমান্বয়ে জমতে জমতে সংকটাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। অন্যদিকে ক্রমে জন্ম নিয়েছিল স্থবিরতার (ংঃধমহধঃরড়হ) পরিস্থিতি।
আসলে সমাজতন্ত্র কোনো ‘নিশ্চল অবস্থা-সমাবেশ’ (ংঃধঃরপ ংঃধঃব ড়ভ ধভভধরৎং) নয়। সমাজতন্ত্র কোনো আগে থেকে স্থির হয়ে থাকা ‘অবস্থাবলির’ স্থির ব্লুপ্রিন্ট নয়। ‘সমাজতন্ত্র’ ব্যাপারটি এমন কিছু নয় যা কিনা আগে থেকেই নির্দিষ্ট অবয়ব সম্পন্ন ‘মঞ্জিল-মকসুদ’রূপে বিরাজ করছে এবং আমাদের কাজ হলো কেবল সেখানে পৌঁছে যাওয়া ও নির্ধারিত ছক ধরে সবকিছু সাজিয়ে ফেলা। বস্তুত সমাজতন্ত্র হলো সাম্যবাদী সভ্যতার পথে অগ্রসর হওয়ার একটি অন্তর্বর্তীকালীন পর্বের সচেতন গতিশীল প্রক্রিয়া। এই কারণে বহিঃস্থ ও অভ্যন্তরীণ বাস্তবতার প্রবাহের আলোকে সমাজতন্ত্র বিনির্মাণের ধারা, পথ ও পন্থাকে ক্রমাগত নবায়ন করতে করতে অগ্রসর হওয়াটা অত্যাবশ্যক। কিন্তু সমাজতন্ত্র সম্পর্কে এক ধরনের ছকবাঁধা ধারণার দ্বারা বহুলাংশে আচ্ছন্ন থাকার কারণে এ কাজটি নিদারুণভাবে অবহেলিত হয়েছিল। ফলে ক্রমেই জমে উঠেছিল সমস্যার পাহাড়।
সমাজতন্ত্রের মার্কসীয় ধারণায় ‘মডেল’ভিত্তিক চিন্তার কোনো স্থান নেই। সমাজতন্ত্র কোনোভাবেই পূর্বনির্ধারিত একটি নিখুঁত অবয়বপূর্ণ কল্পলোকে বিরাজমান ‘মঞ্জিল’ নয়। এটা ক্রমনবায়নের ধারায় প্রবহমান একটি সচেতন প্রয়াস-প্রক্রিয়া। সমাজতন্ত্র নির্মাণ করার ক্ষেত্রে কোনো ‘মডেল’ভিত্তিক ধারণা অনুসরণ করা হলে সেই প্রয়াস শেষ পর্যন্ত একটি ‘ইউটোপিয়া’তে পরিণত করতে বাধ্য। কারণ সে ক্ষেত্রে বাস্তব জগৎ ও তার গতিময়তার বদলে ‘মডেলটিই’ পরম হয়ে উঠবে। তখনই সৃষ্টি হবে গতিময় বাস্তবতাকে ‘মডেলের’ ছকে সাজানোর অমার্কসীয় প্রয়াস। যা কিনা সে কারণেই কোনো না কোনো এক সময়ে প্রবল অসঙ্গতির মুখে ভেঙে পড়তে বাধ্য (যদি না তা উপযুক্ত সময়ে সংশোধন করা হয়)। সোভিয়েত ইউনিয়নের কালজয়ী ও ঐতিহাসিক অনেক সাফল্যের পাশাপাশি তা যে শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ল, সেজন্য এ ধরনের ত্রুটি বহুলাংশে দায়ী ছিল।
সাম্যবাদের পথে অগ্রসর হওয়ার সচেতন প্রক্রিয়া হিসেবে সমাজতন্ত্রের কতগুলো সাধারণ মৌল বৈশিষ্ট্য থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও একটি দেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও বিনির্মাণের বিষয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুনির্দিষ্ট বাস্তবতা ও দেশকালের প্রকৃত অবস্থার দ্বারাই কেবল নির্দিষ্ট হতে পারে এবং সুনির্দিষ্ট বাস্তবতা সম্পর্কে আগে থেকেই সব জানতে পারা অসম্ভব। এ কারণেই কার্ল মার্কস তার সময়কালের (এবং প্রধানত ইউরোপের) পুঁজিবাদের গভীর ও বিস্তৃত বিশ্লেষণ করলেও সমাজতন্ত্রের সর্বজনীন ও সর্বকালীন ‘মডেল’ রচনার কোনোরূপ প্রয়াস থেকে তিনি সচেতনভাবেই বিরত থেকেছেন। সমাজতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট স্বরূপ নির্ধারণের কোনো চেষ্টা না করাটি কোনোক্রমেই কার্ল মার্কসের জ্ঞানের বা পা-িত্যের সীমাবদ্ধতার নিদর্শন নয়, বরং তা তার জ্ঞানের পরিপক্বতাকেই প্রমাণ করে।
সমাজতন্ত্র বিনির্মাণের গতিময় প্রক্রিয়ায় এক সময় যে পথ-পন্থা-কর্মব্যবস্থা অনুসরণ করা খুবই কার্যকর ও যুক্তিসঙ্গত, তা অন্য এক সময় সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়তে পারে। সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা মহামতি লেনিন এ ধরনের ভ্রান্তির বিরুদ্ধে সজাগ ছিলেন। তিনি ছিলেন বাস্তব প্রয়োগের বিষয়ে একজন শ্রেষ্ঠ মার্কসবাদী। বাস্তবতার পরিবর্তন অথবা সে সম্পর্কে নবঅর্জিত গভীরতর উপলব্ধির সঙ্গে সঙ্গে লেনিন বিপ্লবোত্তর সোভিয়েত দেশে সমাজতন্ত্রের বিনির্মাণের পথ-পন্থা-ধারার প্রয়োজনীয় রূপান্তরে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমনকি তিনি ক্ষেত্রবিশেষে সমাজতন্ত্র সম্পর্কে (অর্থাৎ সাম্যবাদে উত্তরণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে) পূর্বের অনেক ধারণাকে ‘সম্পূর্ণ বদলে ফেলার’ও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অর্থনীতি থেকে একটা উদাহরণ টেনে বলা যায়, ‘কনভেয়র বেল্ট’ভিত্তিক উৎপাদন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে উৎপাদন-সংগঠন ব্যবস্থা উপযুক্ত ও যুক্তিযুক্ত, তা কিন্তু আধুনিক কম্পিউটার ও ইনফরমেশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অকেজো ও অনুপযুক্ত-অচল। এবং সে কারণে তা অবশ্য পরিবর্তনীয়। কিন্তু যদি আগের একই ‘মডেল’ ধরে চলার চেষ্টা করা হয়, তা হলে সে কারণে অবধারিতভাবে শুরু হবে বিপত্তি। এতে সমাজতন্ত্র অগ্রসর না হয়ে পিছিয়েই পড়বে এবং যথাসময়ে সংশোধন না করলে তা বিপর্যস্তও হয়ে পড়তে পারে। সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘সমাজতন্ত্র’ বিনির্মাণের অনেক ক্ষেত্রে এ রকমটিই ঘটেছিল।
মোটরগাড়ি চালাতে গিয়ে সময়মতো গিয়ার না বদলালে গাড়ি কোনো এক সময় যেমন বিকল হয়ে পড়তে পারে, সোভিয়েত ইউনিয়নে ‘সমাজতন্ত্র’ বিনির্মাণের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল অনেকটা সে রকম দশা। সে রকম ঘটনাটি কিন্তু মোটরগাড়ির অপরাধ নয়, ত্রুটি ও অপরাধ হয়ে থাকলে তা হয়েছিল মোটরগাড়ি চালনার ক্ষেত্রে। তাই বলতে হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ক্ষেত্রে ত্রুটি ও অপরাধ ‘সমাজতন্ত্রের’ তত্ত্বে ছিল না। ত্রুটি ছিল ‘সমাজতন্ত্র’ সম্পর্কে উপলব্ধিতে ও প্রয়োগে।
তবে এ ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে হুশিয়ার থাকা আবশ্যক। সময়মতো গিয়ার বদলানো প্রয়োজন আছে ঠিকই, কিন্তু তার মানে গিয়ার বদলানোর যুক্তিতে ‘ব্যাক গিয়ারে’ চলার কথা বলাটা হবে অপরাধ। সময়মতো গিয়ার না বদলানোর চেয়ে বড় অপরাধ। সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর অনেকেই গিয়ার বদলানোর যুক্তি দেখিয়ে ‘ব্যাক গিয়ারের’ পথ নিয়েছেন। সমাজতন্ত্রই অচল ও পরিত্যাজ্য বলে তত্ত্ব হাজির করে পুঁজিবাদের কাফেলায় শরিক হয়েছেন। তাদের সম্পর্কে হুশিয়ার থাকাটাও একান্ত কর্তব্য।
পৃথিবী আবার বদলাতে শুরু করেছে। সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তারই নিদর্শন- ‘আমেরিকাসহ গোটা পুঁজিবাদী বিশ্ব আজ ভূত দেখেছে, কমিউনিজমের ভূত!’
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম : সভাপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)
Leave a Reply