নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জন্মদিন পালন করতে ডেকে এনে বন্ধুকে নদীতে ফেলে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত মাঝরাতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড আমানতগঞ্জ ইসলামিয়া কলেজ রোডস্থ রিয়াদের (১৭) বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামীকে গ্রেফতারের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিপজ্জনকভাবে কোন আনন্দ করা উচিত না। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রুমান জানান, গ্রেফতারকৃত রিয়াদ অষ্টমশ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারপর সংসারের প্রয়োজনে হাসপাতাল রোডে একটি জুতার দোকানে চাকরী করতো। ওইদিন জন্মদিন পালনের ভিডিওতে দেখা গেছে রিয়াদ তার বন্ধু দীপকে কোলে তুলে নিয়ে নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। যেহেতু দীপ সাতার জানে না তাই সে আর বেঁচে ফিরতে পারেনি। যদিও রিয়াদ ও তার বন্ধুরা পরবর্তীতে বুঝতে পারেন নদীতে ফেলে দেওয়া দীপ সাতার জানে না, তারা চেষ্টা করলেও আর দীপতে তুলতে পারেনি। ততক্ষণে দীপ তলিয়ে গেছে।
এসআই রুম্মান বলেন, ৩ নভেম্বর অপমৃত্যু মামলা হলেও ২৪ নভেম্বর জন্মদিনের ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ভিডিও দেখে অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তারপরই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রিয়াদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, আমানতগঞ্জ এলাকার মিন্টু ঘোষের ছেলে দীপ ঘোষ এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এক বিষয়ে ফেল করায় আবারও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিগত সোমবার (২ নভেম্বর) ছিল দীপের বন্ধু জুতার দোকানের কর্মচারী রিয়াদের জন্মদিন। ওইদিন রিয়াদ, দীপসহ ১০-১২ জন বন্ধু মিলে কীর্তনখোলা নদীতে ট্রলার করে রিয়াদের জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তারা একটি ট্রলার ভাড়া করে কীর্তনখোলা নদীতে ঘুরে বেড়ায়। রাত ৮টার দিকে কেক কাটার সময় হৈ-হুল্লোড় করতে গিয়ে ট্রলার থেকে দীপ ঘোষ নদীতে পড়ে যায়। সাঁতার না জানায় সে নদীতে তলিয়ে মারা যান। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড়শ ফুট দূরে দীপের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরিরা। এ ঘটনায় নিহত দীপের পিতা মন্টু ঘোষ বাদী হয়ে রিয়াদসহ ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করেন, রিয়াদ দীপকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে।
Leave a Reply