নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার বলেছেন, দু-চারজন সদস্যের খামখেয়ালীপনায় গোটা ডিপার্টমেন্টকে নাজেহাল হতে দেয়া যাবে না। অগ্রহণযোগ্য আচরণ পরিলক্ষিত হলে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে সকলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে বিএমপি’র প্রতিটি বিভাগে অভ্যান্তরীণ গোয়েন্দা তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। বৃহস্পতিবার বরিশাল পুলিশ লাইন্স ড্রিল সেড মাসিক কল্যাণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শৃঙ্খলাগুলো আজ বিশ্ব স্বীকৃত, সেগুলো অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। নিষ্ঠার সাথে, শৃঙ্খলার সাথে ইতোমধ্যে আমরা পেশাদারীত্বকে সবার আগে তুলে ধরে অনেক বড় বড় ইভেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। আমাদের প্রতিটি কাজে আগ্রহ থাকতে হবে, কোনপ্রকার অনাগ্রহ /অনীহা গড়িমসি চলবে না। এই ধরনের সদস্য যদি এখনও সংশোধিত না হয়ে অপরিবর্তিত থাকে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।” পুলিশ কমিশনার বলেন, ইমান, নিয়ত ঠিক রেখে কাজ করতে গিয়ে ভুল হলে তা ভিন্ন বিষয়। মানবিক মূল্যবোধ বজায় রেখে রাষ্ট্রের সুরক্ষায় কাজ করতে হবে। ঐতিহ্য সংস্কৃতির বিপরীতে কেউ যেন কোন অগ্রহণযোগ্য কাজে লিপ্ত হতে না পারে সে বিষয়ে,জননিরাপত্তায় কঠিন ঝুঁকিপূর্ণ ডিউটি পালন কালে বিশেষ করে রাত্রিকালীন ডিউটিতে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোন ঢিলেঢালা চিত্র পেলে বরদাস্ত করা হবে না। সরকারি ব্যবস্থাপনার সুবিধা ছাড়া অসৎভাবে বাড়তি লাভবান হওয়ার কালচার ভেঙে ফেলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, থানা জনগণের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল, প্রতিটি তদন্তে যেন সঠিক চিত্র উঠে আসে,পেশার বাহিরে দুরভিসন্ধিমূলক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কোন অন্যায় চেষ্টা, অনুকম্পা,অগ্রহণযোগ্য কোন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের মেসেজ স্পষ্ট। কোন পুলিশ সদস্য কোনভাবেই মাদক বেচা-কেনা, মাদক বিস্তারে সুবিধা দেয়া-নেয়া ,মাদক খাওয়ায় জড়িয়ে গেলে সে আর পুলিশ থাকবে না। তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। আকস্মিক ডোপ টেস্ট চলমান থাকবে। ইতোমধ্যে মাদক সংশ্লিষ্টতায় ফৌজদারী আইনে মামলা এবং চাকুরিচ্যুত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে ।এ বিষয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ে নিখুঁত নজরদারি রাখতে হবে। পরস্পর একে-অপরকে এই বিভ্রান্তিকর পথ থেকে সরিয়ে আনতে হবে। শাহাবুদ্দিন খান বলেন, মহামারী করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে নিজেকে সতর্ক রেখে কর্তব্য পালনের পাশাপাশি যে প্রশংসনীয় ভূমিকায় রয়েছি। তা থেকে সরে আসা যাবে না, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শিথিলতা চলবে না। নিয়ম না মেনে অসুস্থ হয়ে গেলে অর্থনীতির চাকাও পিছিয়ে যাবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ৯৭ টি বিটের একেকজন বিট অফিসার সংশ্লিষ্ট এলাকার অভিভাবক-সামাজিক নেতা, গোটা ইউনিটের এম্বাসেডর; তাঁর আচার-আচরণ, সততায় যেন পুলিশের ভালো চিত্র ফুটে ওঠে। তার চরিত্র হবে রোল মডেল চরিত্র। বিট পুলিশিং, ওপেন হাউজ ডে, কমিউনিটি পুলিশিং, মসজিদভিত্তিক কার্যক্রম জোরদারের মাধ্যমে জনগণের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে সমসাময়িক ইস্যু, প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ সকল অনিয়ম বন্ধে করণীয় ও বর্জনীয় শীর্ষক সচেতনতামূল বক্তব্য তথা আভিযানিক কার্যক্রম আরো শক্তিশালী করে মানবাধিকার সমুন্নত রেখে নির্ভেজাল আইন প্রয়োগ করে অপরাধ দমন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের লিডিং ইউনিট হিসেবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কল্যাণ সভা শেষে ভালো কাজ এবং বিভিন্ন আভিযানিক কাজের সফলতার জন্য বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং অবসর জনিত বিদায় গ্রহণকারী সদস্যদের বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। সহকারী পুলিশ কমিশনার (ফোর্স এন্ড কাউনিয়া থানা) মোঃ মাসুদ রানা’র সঞ্চালনায় উক্ত কল্যাণ সভায় উপস্থিত ছিলেন উপ -পুলিশ কমিশনার (সাপ্লাই এন্ড লজিস্টিকস) মোঃ জুলফিকার আলি হায়দার, উপ -পুলিশ কমিশনার (সদর-দপ্তর) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মোকতার হোসেন পিপিএম সেবা, উপ -পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর বিশেষ শাখা) জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক, উপ -পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ খাইরুল আলম, উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের, উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম-বার সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
Leave a Reply