দখিনের খবর ডেস্ক ॥ আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ভাড়াভিত্তিক সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু হলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো মেয়াদ পূর্তিতে অবসরে যাবে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হওয়ায় ভাড়াভিত্তিক কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে এক হাজার ১০৯ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু আছে যা তিন বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অবসরে যাবে। বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, এস. এম. জগলুল হায়দার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং বেগম নার্গিস রহমান অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে ১৬টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক ৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৩৫২ মেগাওয়াট এবং ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক ৯টির উৎপাদন ক্ষমতা ৭৫৭ মেগাওয়াট। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে অসহনীয় পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতি দ্রুত বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের তাৎক্ষণিক পরিকল্পনায় তিন বছর, পাঁচ বছর ও ১৬ বছর মেয়াদী ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ওই কেন্দ্রগুলো স্থাপনের মাধ্যমে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে ২০১১-১২ অর্থবছরে জিডিপিতে অতিরিক্ত বিদ্যুতের অবদান প্রায় ২৩ হাজার ২১২ কোটি হতে ১ লাখ ২১ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা না গেলে খাতভিত্তিক উৎপাদন এবং দেশজ উৎপাদন ও রফতানি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেত। এতে সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য সূচক এবং কর্মসংস্থান ও দারিদ্র দূরীকরণ সংক্রান্ত খাতভিত্তিক সূচকে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ পর্যন্ত ৬টি রেন্টাল ও ৬টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ২৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ১৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুইটি ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৩৯৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬টি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সব মিলে মেয়াদোত্তীর্ণ ১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট ক্ষমতা ৮৩৩ মেগাওয়াট। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনটি রেন্টাল ও দুইটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গ্যাসভিত্তিক এবং এর উৎপাদন ক্ষমতা ২৪৫ মেগাওয়াট।
Leave a Reply