ক্রীড়া ডেস্ক ॥ ম্যাচ এবং সে সঙ্গে সিরিজ দুটোই জেতার দুর্দান্ত এক সুযোগ পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ১৩ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ১০০। বাকি ৭ ওভারে ৬৬ রান তুললেই পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার কীর্তিটা হয়ে যেত জিম্বাবুয়ের। এমন সুযোগ হেলায় হারাল স্বাগতিক দল। মোহাম্মদ হাসনাইন প্রথমে ধাক্কা দিলেন, পরে হাসান আলীর এক ওভারে এল জোড়া আঘাত। উইকেটে তবু ব্রেন্ডন টেলর ছিলেন বলেই আশা বেঁচে ছিল জিম্বাবুয়ের। কিন্তু ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় নতুন করে নায়ক হয়ে ওঠা হয়নি টেলরের। পাকিস্তানের কাছে গতকাল সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২৪ রানে হেরে গেছে জিম্বাবুয়ে। ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে কষ্টার্জিত জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেই বসেছিল পাকিস্তান। তা-ও ১১৯ রানের লক্ষ্যে ৯৯ রানে অলআউট হয়ে! গতকালও হারের সম্ভাবনা জেগেছিল সফরকারীদের। ১৬৫ রানের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার ওয়েসলি মাধভেরে। অন্য প্রান্তে টারিসাল মুসাকান্দা সে তুলনায় একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছিলেন। ১১ বলে ১০ রান করা মুসাকান্দা হাসান আলীর প্রথম শিকার হয়ে ফিরলেন পঞ্চম ওভারে। এ ধাক্কা জিম্বাবুয়ে সামলেছে পাল্টা আক্রমণে। মাধভেরে সঙ্গী পেয়েছিলেন তাদিবানাশে মারুমানিকে। এ দুজন ৪৫ বলে ৬৫ রান তুলে দলকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছেন। ৩৭ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন মাধভেরে। ১৩তম ওভারের শেষ বলে মারুমানির স্টাম্প উপড়ে নেন হাসনাইন। চার চারে ২৬ বলে ৩৫ রানে থামেন মারুমানি। জিম্বাবুয়ের জয়ের সম্ভাবনা তখনো ভালোভাবে ছিল। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান শেষ ৬ ওভারে ৬৫ রান তুলেছিল। জিম্বাবুয়ে সে কাজ করার জন্য ৬ বল বাড়তি পেয়েছিল। এক প্রান্তে মাধভেরে তো ছিলেনই, শুধু অন্য প্রান্তে আরেকটু আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেই চলত। জিম্বাবুয়ের ইনিংস পথ হারায় এরপর। অভিজ্ঞ টেলরের টাইমিং হচ্ছিল না। থিতু হতে সময় নিচ্ছিলেন। পরের ১৩ বলে এসেছে মাত্র ৭ রান। ১৬তম ওভারে হাসান আলীকে তুলে মারতে গিয়ে সরফরাজ আহমেদের দারুণ ক্যাচের শিকার হন মাদভেরে। ৪৭ বলে ৫৯ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। ওই ওভারেই নিজের ইনিংসের প্রথম বলে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রেগিস চাকাভা। ২৫ বলে ৫৫ রান দরকার—এই অবস্থান নামেন শন উইলিয়ামস। অন্য প্রান্তে টেলর। কিন্তু দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুজন জিম্বাবুয়েকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দিতে পারেননি। ১৯তম ওভারে ফিরে গেছেন উইলিয়ামস (৯)। আর শেষ ওভারে রানআউট হওয়ার আগে ২২ বলে ২০ রান করেছেন টেলর। ৭ উইকেটে ১৪১ রান করে থেমেছে জিম্বাবুয়ে। পাকিস্তানের হাসান আলী ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট! দুই ওপেনারের পাশাপাশি তিনি তুলে নিয়েছেন শন উইলিয়ামস ও চাকাভাকেও। ম্যাচসেরা খুঁজে নিতে তাই বেগ পেতে হয়নি কাউকে! এর আগে পাকিস্তানের ইনিংসের গল্পটা দুজনের। পাওয়ার প্লেতে শারজিল খান আউট হওয়ার পর জুটি বেঁধেছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম। সে জুটি থামে ইনিংস শেষ হওয়ার তিন বল আগে। এর মাঝে বাবর ও রিজওয়ান মিলে তুলেছেন ১২৬ রান। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে রান তোলার দায়িত্বটা বুঝে নিয়েছিলেন রিজওয়ান। সে তুলনায় বেশ ম্লান ছিলেন বাবর। ৩৯ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া রিজওয়ান অপরাজিত ছিলেন ৬০ বলে ৯১ রান করে। ফিফটির আগে চার চার মারা রিজওয়ান পরের অংশে এক চারের সঙ্গে তিন ছক্কা মেরেছেন। সে তুলনায় বাবরের ইনিংসটি ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ৪৪ বলে পাঁচ চারে ফিফটি তোলা বাবর দুই বল পর আউট হয়েছেন ৫২ রানে।
Leave a Reply