পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সরাসরি আঘাত না হানলেও নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার দক্ষিণ অঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদীপাড়ের বিভিন্ন এলাকার বাঁধ ভাঙার কারণে প্রাথমিকভাবে শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ড ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বলে জানান জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবে মওলা মো. মেহেদী হাসান। এছাড়া মাছের ঘের ডুবে যাওয়ায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রায় ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী। মাহাবুবে মওলা মো. মেহেদী হাসান জানান, বিভিন্ন বাঁধের ৪টি পয়েন্ট ভেঙে জোয়ারের পানি ভেতরে প্রবেশ করায় ফসলি জমি ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। হুলারহাট-ইন্দুরকানী বাঁধের ৩ কিলোমিটার এবং মঠবাড়িয়ায় বিভিন্ন নদ-নদীর প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এবং ৭৮০ মিটার নদী ভেঙেছে। এসব বাঁধ ও নদী ভাঙন মেরামতে ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারে জেলার ৫৯৬ হেক্টরের ২১৫৭টি মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ায় ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এর ফলে মাছ চাষিদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পিরোজপুরের উপপরিচালক চিন্ময় রায় জানান, ১৬৭ হেক্টরে আউশ বীজতলা, ৭৩১৮ হেক্টরে আউশ আবাদ, ১৩৩৫ হেক্টরের বিভিন্ন জাতের সবজি, ১৪১ হেক্টরে পান, ১৬৫ হেক্টরে কলা, ৮ হেক্টরে পেঁপে, ১৮ হেক্টরে মরিচ, ১৫ হেক্টরে হলুদ, ৫ হেক্টরে আদা, ১ হেক্টরে তিল, ১৬৬ হেক্টরে পাট ও ৫ হেক্টরে ভুট্টাক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পানিবন্দি মানুষের মাঝে খিচুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবার পরিবেশন করা হয়। জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে এ খাবার বিতরণ করেন।
Leave a Reply