স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাহিদুর রহমান মজুমদার স্বপদে বহাল রয়েছেন।দ্বায়িত্ব হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করেছেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের হয়রানির আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, খামখেয়ালিপনার প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট ও কালোব্যাজ ধারন কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। ধর্মঘটের দিত্বীয় দিন গতকাল রোববার কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সকাল দশটা থেকে অবস্থান ধর্মঘট ও কালোব্যাজ ধারন কর্মসুচী পালন করেন। বেলা ১টা পর্যন্ত এ কর্মসুচী চলে। এদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অবস্থান ধর্মঘট ও কালোব্যাজ ধারন কর্মসুচীতে একাত্মতা প্রকাশ করে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ধর্মঘটী শিক্ষকদের পক্ষে শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন,অধক্ষ সাহিদুর রহমান মজুমদার একজন শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী। তার প্রতিটা কথায় থাকে মিথ্যা আর অপব্যাখ্যায় ভরপুর। মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, অধ্যক্ষ যোগদান করার পর থেকেই বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের নামে টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন, দুর্নীতি, অনিয়ম, অসচ্ছতা, এডহক হওয়ার পুর্বে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন না দেয়া, অথচ অধ্যক্ষ নিজে ৬ মাসের অগ্রিম বেতন নিয়েছেন,অব্যয়িত ব্যয়ের অনুমোদন না থাকলেও অর্থ বাড়িয়ে কমিটি বিহীন নিজে কেনাকাটার নামে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আদেশ অমান্য করে শতকরা বিশভাগ প্রেষনভাতা/অতিরিক্ত ভাতা গ্রহন, জাতীয় দিবসে অনুপস্থিত থাকা, শিক্ষিকা ফারজানা আক্তার ঝুমার সাথে অমানবিক আচরন করা, সন্তান সম্ভাবা এই শিক্ষিকাকে কলেজে আসতে বাধ্য করা, ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করে অর্থ আত্মসাৎ করা, অনুমোদনহীন ছুটি কাটানো,বরিশাল ত্যাগ করে কাউকে দ্বায়িত্ব না দিয়ে, শিক্ষকদের অকারনে শোকজসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানীসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। গত ২৭ মে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা বিক্ষোভ করে। ২৯ মে থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অবস্থান ধর্মঘট ও কালোব্যাচ ধারন কর্মসুচী পালন শুরু করে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন অধ্যক্ষ সাহিদুর রহমান মজুমদার। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের সত্যতা প্রমাণ পায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২২ এপ্রিল ‘২১ তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ কে প্রত্যাহার করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ন্যস্ত করা হয়। ২৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সামরিক সচিবের পক্ষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু হায়াত মোঃ রীশাদ মোরশেদ স্বাক্ষরিত পত্রের মাধ্যমে তাকে বিএমএ পদায়ন করা হয়। কিন্তু অধ্যবধি তিনি বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার অর্পণ করে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি।যোগদান না করে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে বসে আখেরী সময়ে আখের গোচাচ্ছেন ও শিক্ষকদের হয়রানী করছেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগ।
Leave a Reply