নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাকেরগঞ্জের দক্ষিন কবাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্বাধীনতার পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলটি শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় স্থানীয় ভাবে অনেক ঐতিহ্যেরও বাহক। নদী ভাংঙলিত এই স্কুল টি নিয়ে স্বার্থ সিদ্ধির রাজনীতি শুরু করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে ওই চক্রটি সংকোচিত একটি স্থানে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের পায়তারা করছে। ইতমধ্যে বিতর্কিত ওই জমি স্কুল ভবন নির্মানের জন্য নির্ধারন করেছে উপজেলা প্রশাসন। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা পক্ষের অভিযোগ তারা বিদ্যালয় ভবন করাসহ পুরো স্কুলের জন্য ৩২ শতাংশ জমি দান করার জন্য দিতে চাইলেও প্রশাসন না নিয়ে ১২ শতাংশ জমির মধ্যে সংকুচিত স্থানে বিদ্যালয় ভবন নির্মার করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ম্যাজেটিং কমিটির সভাপতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উপজেলা প্রশাসন এ কাজ বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগী হয়েছে। তবে নিয়ম মেনেই ভবন নির্মানের জন্য জমি নির্ধারন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায়। জানা গেছে ১৯৬২ সালে বাকেরগঞ্জের দক্ষিন কবাই ইউনিয়নের মাতুয়াখালীতে নিজ জমি দান করে ৭৩ নং দক্ষিন কবাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে সার্বিক সহায়তা করেন মরহুম আতাহার উদ্দিন গাজী। ধীরে ধীরে পান্ডব নদীর ভাঙনের কবলে পরে স্কুলের জমি ও ভবন। ভাঙনের তীব্রতায় যখন কোন ভাবেই একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছিলো না তখন শিক্ষা মন্ত্রনালয় নতুন স্থানে ভবন করার জন্য উদ্যোগ নেয় এবং ভবন নির্মানের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্ধারনের জন্য একটি কমিটি করে দেয়। যে কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী,থানা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন। কয়েক দিন আগে ওই কমিটি স্কুল ভবন নির্মানের জন্য দক্ষিন কবাই ইউনিয়নে মাতুয়াখালীতে ১২ শতক জমি নির্ধারন করে। যদিও কমিটির বেশীর ভাগ সদস্য ওই জমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেননি। জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আতাহার উদ্দিন গাজীর ছেলে মাসুদ আলম গাজী বলেন আমার বাবা স্কুল প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। নদী ভাঙনে স্কুলের জমি ভেঙে যাওয়ায় আমি পুরনায় ৩২ জমি (এক দাগের) দিতে চাচ্ছি কিন্তু প্রশাসন তা গ্রহন না করে স্বার্থান্বেসী একটি মহলের কথায় অন্যত্র ভবন নির্মান করতে চাইছে। তিনি আরো বলেন এখন যেখানে জমি নির্ধারন করা হয়েছে তা সোনাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুব কাছে এবং জমির পরিমানও কম। যেখানে একটি পূর্নাঙ্গ স্কুল হতে পারে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন স্কুলের সাবেক সভাপতি বাদল সিকদার তার বাড়ির সামনে স্কুলটি নেওয়ার জন্য প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করছে। এখন যেখানে স্কুলের জন্য জমি নির্ধারন করা হয়েছে তা তার বাড়ির সামনেই। তার সাথে এই চক্রান্তে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা ও ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক খান বাদলও। জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন জমি নির্ধারনের জন্য একটি কমিটি রয়েছে সেই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জমি নির্ধারন করা হয়েছে। এখানে আমার একক কোন সিদ্ধান্ত নেই। তবে তিনি জমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেননি বলে জানান। প্রায় একই কথা বলেন থানা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন জমি নির্ধারন নিয়ে কোন পক্ষের অভিযোগ থাকার কথা না। তারপরও কারো অভিযোগ বা দাবী থাকলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বলতে পারে। সব বিষয়ে আলাপকালে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায় বলেন আমরা কোন মালিকানা জমি নিচ্ছি না স্কুলের নামে যে জমি আছে তাতেই নতুন ভবন তৈরী করা হবে। এ বিষয়ে কারো কোন কিছু বলার থাকলে তার সাথে কথা বলার জন্য বলেন।
Leave a Reply