নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মাদক ক্রয় বিক্রয়ের একটি নিরাপদ স্থান হিসাবে বরিশাল নগরীর রসুলপুরকে বেছে নিয়েছে কতিপয় ব্যক্তি-বিশেষ। কীর্তনখোলা নদীর পশ্চিম তীরে গড়ে ওঠা এই পল্লী অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অতি সহজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনির চোখ ফাঁকি দিয়ে গাঁজা, ইয়াবার রমরমা ব্যবসা চলছে। কলোনীর অন্তত অর্ধশত বাসিন্দা মাদকে ক্রয় বিক্রয়ে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে চিহ্নিত এমন কয়েক জন মিলে মাদকের এই ভয়ানক সিন্ডিকেট গড়ে তুললেও তাদেরকে বাগে আনা যাচ্ছে না। সময় বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ২/১ জন ধরা পড়লেও আইনি ফাঁক-ফোকড় দিয়ে বেড়িয়ে ফের ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ কিছুদিন পূর্বে কলোনীর বাসিন্দা পলাশ ও তার স্ত্রী লিপিকে গাঁজার একটি চালানসহ আটক করে কোতয়ালি পুলিশ। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই তারা আইনি ফাক গলে বেড়িয়ে এসে ফের একই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। একইভাবে অপরাপর মাদক ব্যবসায়ী আটক এবং মামলায় গ্রেপ্তার হলেও তাদের যেনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। বরং মামলা ও জেল জরিমানায় তারা যেনো আরোও অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে।
কলোনীর সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ রসুলপুরের পলাশ-লিপির আধিপত্য থাকলেও পুলিশের হয়রানিতে তারা যখন কোনঠাসা তখন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে সোহাগী, নাসির, জসিম, কালু ওরফে টিএনটি কালু , এসপি মাহাবুব, মনির ওরফে টেলি মনির, হিরন, দিপুলাল, মাটিভাঙা রুবেল, রাসেদ। বিষ্ময়কর বিষয় হচ্ছে- জসিম এবং রাসেদের পুরো পরিবার মাদক বাণিজ্যের সাথে জড়িত। ঘটনাবলীতে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও কিছিুতেই যেনো রহিত করা সম্ভব হচ্ছে না ।
অপর একটি সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছে ডিবি-পুলিশের সোর্স। যারা মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও সোর্স হিসাবে তথ্য সরবরাহের কারণে থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে। যদিও পুলিশের দাবি, সোর্স সে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে, এক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
কলোনীর সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখানে মাদক নিয়ে আসার ক্ষেত্রে নিরাপদ রুট হিসেবে কীর্তনখোলা নদীকে ব্যাবহার করা হচ্ছে। নৌপথে অধিকাংশ সময় মাদকের চালানগুলে কলোনিতে নিয়ে আসা হয় সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবদি। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও টের পাচ্ছে না নদী তীরবর্তী কলোনীতে মাদক কি আকারে ছড়িয়েছে। এক্ষেত্রে ডিবি পুলিশের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, রসুলপুরসহ শহরের মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের নজরদারিতে রয়েছে। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার ও কারাবরণ শেষে ফের জড়িয়ে পড়া থেকে রোধ করতে হলে কাউন্সিলিং প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মঞ্জুর রহমান। এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী রসুলপুর কলোনীতে আজকে থেকে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে। এবং মাদকের মূল উপড়ে ফেলতে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
Leave a Reply