নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা রোগীদের পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। তাই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চেয়ে বরাদ্দ প্রায় ৩গুণ বাড়িয়ে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর জন্য দৈনিক খাবার বরাদ্দ হয় ৩০০ টাকা। অপরদিকে, করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার-নার্স-টেকনোলজিস্টদের দৈনিক খাবার বরাদ্দ হয় ৫০০ টাকা। করোনা রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের পুষ্টিকর খাবারের জন্য সরকার বরাদ্দ বাড়ালেও অনেক কিছুই জুটছেনা তাদের কপালে। পোঁকাযুক্ত চালের ভাত, সস্তার থাই মাগুর ও তেলাপিয়া মাছ এবং ব্রয়লার মুরগী আর মানহীন তরকারি দেওয়া হয় রোগীদের। স্বাস্থ্য কর্মীরাও পাচ্ছেন না পুষ্টিকর খাবার। করোনাকালীন সময়ে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য বরাদ্দ অনুযায়ী খাবার দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কর্মচারী সমিতি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক।
গত মার্চে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের কার্যক্রম শুরু হয়। হাসপাতালের সাধারন রোগীদের চেয়ে করোনা ওয়ার্ডের রোগীদের প্রায় তিনগুন খাদ্য বরাদ্দ থাকলেও তাদের দেয়া খাবার মুখে তুলতে পারছেনা করোনা ওয়ার্ডের রোগীরা। তাদের দেয়া ভাতে পাওয়া যায় মরা পোকা, দেয়া হয় থাই মাগুর তেলাপিয়া মাছ আর ব্রয়লার মুরগীর মাংস। রান্নায়ও ঠিকভাবে দেয়া হয়না তেল-মসলা। মানহীন খাবার হওয়ায় ওই খাবার রোগীরা গ্রহন করেন না। অনেকে স্বজনদের দিয়ে বাইরে থেকে খাবার এনে খেয়ে থাকেন। এমন অভিযোগ করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের। রোগীর চেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুন হলেও তার অর্ধেকও জোটেনা তাদের কপালে। রোগীদের একই খাবার দেয়া হয় তাদের, তাও আবার মানহীন। এর নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তাদের। স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, তারা শুনছেন তাদের দৈনিক খাবার বরাদ্দ ৫০০ টাকা। কিন্তু তারা আজ পর্যন্ত ৫০০ টাকার খাবার পাননি। স্বাস্থ্য কর্মীদের সর্বোচ্চ ২০০ টাকার খাবার দেয়া হয় বলে তাদের দাবি। মানহীন খাবার হওয়ায় অনেক স্বাস্থ্যকর্মী কর্তৃপক্ষের ওই খাবার গ্রহণ করেন না। তারা বাসা কিংবা হোটেল থেকে খাবার এনে খাইয়ে থাকেন বলে জানান। করোনাকালে স্বাস্থ্য কর্মীদের শারীরিকভাবে সুস্থ্য ও মনোবল চাঙ্গা রাখতে বরাদ্দের পুরো টাকা তাদের খাবারে ব্যয় করার দাবি জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতাল চতুর্থ শ্রেনী কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের আলী কবির। এদিকে রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের খাবারে কোন অনিয়ম হচ্ছে না বলে বিশ্বাস হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেনের। তারপরও অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে বরং শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডের খাবার মান অনেক ভালো বলে দাবি করেন ডা. বাকির হোসেন।
Leave a Reply