নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) সিনিয়র স্টাফ নার্স (ব্রাদার) রফিকুল ইসলামের নগ্ন ভিডিও ভাইরালের ঘটনা তদন্তে নার্সিং অধিদপ্তর থেকে ২ কর্মকর্তা আসছেন বরিশাল।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টায় অধিদপ্তরের দেওয়া তদন্ত বোর্ডের প্রধান নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এর ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ডিপিএম ডক্টর আব্দুল লতিফ এবং নার্সিং অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এসে ব্রাদার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে এমনটাই নিশ্চিত করেছে শেবাচিম হাসপাতালে সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার। এর পূর্বে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ভিডিও ভাইরাল এর ঘটনায় ব্রাদার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (নার্সিং) মলিনা রানী মন্ডলকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়। তিনি তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়ার পর তদন্ত করে নার্সিং অধিদপ্তর প্রতিবেদন জমা দেন।
এছাড়া বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন ব্রাদার রফিকুলের বিরুদ্ধে আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। প্রতিবেদনে ‘তথ্য প্রযুক্তি আইন’ সম্পর্কে মলিনা রানী মন্ডলের স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় তিনি নার্সিং অধিদপ্তরকে জানান, গত ২৩জুন শেবাচিম হাসপাতালে ব্রাদার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক শিরিন খানম স্বাক্ষরিত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির দুই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তদন্ত করবে বলে অধিদপ্তরের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এবং ব্রাদার রফিকুল ইসলামকে থাকার নোটিশ প্রদান করে। জানা গেছে, চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকার ওয়াজেদ আলীর ছেলে শেবাচিম হাসপাতালের ঘটনার সময় মহিলা অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে কর্মরত রফিকুল ইসলামের একটি পর্ণ ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। ২০ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে তার সাথে এক নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় অন্তরঙ্গ মুহুর্তে দেখা যায়। পর্ণ ভিডিওতে থাকা ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কোন এক রোগীর স্বজন বলে দাবি রফিকুলের স্ত্রী ও সহকর্মীদের।
রফিকুল ইসলামের ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ‘চাকরির সুবাধে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী কিংবা তাদের নারী স্বজনদের সঙ্গে রফিকুল প্রথমে সখ্যতা গড়ে তোলেন। সেই সখ্যতা থেকে প্রেমের ফাঁদ এবং পরবর্তীতে তা অনৈতিক সম্পর্ক গড়ায়। সূত্র জানায়, ‘রফিকুলের স্ত্রী শেবাচিম হাসপাতালের স্টাফ নার্স তানিয়া বেগম। তিনি কর্মস্থলে চলে গেলে নগরীর সিকদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীর অবর্তমানে বহিরাগত নারীদের নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড চালাতো বলে দাবি বাড়ির মালিক রেবা আক্তারের। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে স্ত্রী তানিয়াকেও প্রতিনিয়ত নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে। তারপরও দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এখনো তিনি রফিকের সংসার ছেড়ে যাননি। বরং তাকে খারাপের পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা বার বার করেছিল। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। রফিকের স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, ‘বিয়ের পূর্বে থেকেই রফিকের চরিত্র খারাপ। আমাকে সে মিথ্যা বলে বিয়ে করেছে। বিয়ের পরে জানতে পারি তার পূর্বেও একটি বিয়ে রয়েছে। ওই ঘরে সন্তানও রয়েছে। তাকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করে। এদিকে হাসপাতালের কয়েকজন নার্স জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি এক নারী পর্ণো ভিডিও ধারণ করে রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা আদায় করে অপর এক নারী। হাসপাতালের ব্রাদার এবং সুদ ব্যবসায়ী কাজলের নিকট থেকে মাসিক ২৫ হাজার টাকা সুদে পাঁচ লাখ টাকা এনে ওই নারীকে দেয়। তবে সেই নারী ভাইরাল হওয়া পর্ণো ভিডিওতে থাকা নারী কিনা সেটা নিশ্চিত নন কেউ। তদন্তের বিষয়ে জানতে ব্রাদার রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বরিশালটাইমসকে জানান, ব্রাদার রফিকুল ইসলাম এর ভিডিও ভাইরাল ঘটনায় নার্সিং অধিদপ্তর থেকে আগামীকাল তদন্ত আসছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত বোর্ড যা পাবে তা ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply