বাবুগঞ্জ প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে বিমানবন্দরের পাশেই অব্যবহৃত ও কৃষি জমিতে বাড়ি-ঘর নির্মাণের হিড়িক লেগেছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে বিমানবন্দরের পাশেই অব্যবহৃত ও কৃষি জমিতে বাড়ি-ঘর নির্মাণের হিড়িক লেগেছে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে বিমানবন্দরের পাশেই অব্যবহৃত ও কৃষি জমিতে বাড়ি-ঘর নির্মাণের হিড়িক লেগেছে। রহমতপুরস্থ বরিশাল বিমানবন্দর সংলগ্ন ওই এলাকায় প্রস্তাবিত বিমানবাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণের প্রস্তাবিত জমিতে জরিপের খবরেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে একাধিক চক্র, যারা কৃষি ও পরিত্যক্ত জমিতেও আধা কাঁচা-পাকা ঘর ও ভবন নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, অধিক মুনাফার আশায় এ উৎসবে মরিয়া হয়ে উঠেছে একাধিক মহল। তারা রহমতপুর ইউনিয়নের খানপুরা গ্রামে এসব স্থাপনা কোনোভাবে তৈরি করছে। গ্রামের ভেতরে এমনভাবে ইট, কাঠ ও টিন দিয়ে বাড়ি তোলা হচ্ছে যেখানে রাস্তা না থাকায় প্রবেশ করাও কষ্টকর। অনেক ক্ষেত্রে ঘরের অবকাঠামো থাকলেও নেই কোনো বাথরুম-রান্নাঘর। আবার বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থাও নেই। স্থানীয়রা জানান, গ্রামের একটি বড় জায়গা সরকার বিমানবাহিনীর ঘাঁটির জন্য অধিগ্রহণ করবে বলে তারা শুনেছেন। আর তাদের কৃষি ও পরিত্যক্ত জমি অধিগ্রহণে যে ক্ষতিপূরণ মূল্য নির্ধারিত হবে তার চেয়ে বসতভিটা থাকলে বেশি মূল্য পাবেন তারা। তাই অনেকে নিজে আবার অনেকে বিশেষ মহলের সহায়তায় কোনোভাবে নতুন বাড়িগুলো নির্মাণ করছেন, যার মধ্য দিয়ে বেশ মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হবে।
এরই ধারবাহিকতায় এ পর্যন্ত গত কয়েক মাসে প্রস্তাবিত ঘাঁটির কাছে আনুমানিক শতাধিক নতুন বাড়ি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম। তবে স্থানীয় অনেকে বলছেন, কোন জমি অধিগ্রহণের আওতায় আর কোন জমি আওতায় নয়, তা না জেনেই যে যেভাবে পারছে, বাড়ি তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অধিগ্রহণবিহীন জায়গায় যারা বাড়ি তৈরি করেছেন তারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বেন। তবে সাবিনা বেগম নামে স্থানীয় বাসিন্দা জানান, তিনি যে ঘরটি তৈরি করেছেন, প্রয়োজন হলে সেটিতে তিনি থাকতেও পারবেন। এক্ষেত্রে অধিগ্রহণ না হলেও বাড়িটি তার কাজে আসবে। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে বিমানবন্দরের পাশেই অব্যবহৃত ও কৃষি জমিতে বাড়ি-ঘর নির্মাণের হিড়িক লেগেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিমানবাহিনী ঘাঁটির প্রস্তাবিত পরিকল্পনার আওতায় খানপুরা গ্রামের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বা প্রায় ১৫৮ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। তারা শিগগিরই গ্রামের ১৫৮ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য তাদের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে বলেও জানা গেছে। আর প্রস্তাবটি অনুমোদনের পরেই প্রকৃত অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পুরো এলাকার ভিডিও রেকর্ডিং সংগ্রহ করা হয়েছে। সুতরাং, সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে স্থাপনা নির্মাণে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার সম্ভবনা নেই।’ আর সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা বলেন, ‘জমিতে বাড়ি-ঘর, গাছপালা থাকলে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য একরকম হয়। এক্ষেত্রে বাড়তি অর্থের জন্য তাৎক্ষণিক বাড়িঘর নির্মাণ করা, গাছ লাগানোর মতো কাজগুলো অনৈতিক। এসব কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ তবে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের অর্থ অসৎ উপায়ে কেউ হাতিয়ে নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস,এম অজিয়র রহমান।
অন্যদিকে ভূমি অধিগ্রহণে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply