আগৈলঝাড়া প্রতিবেদক ॥ ঈদ-উল-আযহা’র বাকি আর মাত্র ১০দিন। কোরবানির ঈদ মানেই পশু জবাই। আর পশু জবাই করতে প্রয়োজন দরকার দা, বটি, ছুরি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধারালো সরঞ্জাম। তাই গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এসব জিনিসপত্র তৈরী করতে আগুনে পোড়ানো নরম লোহায় হাতুড়ি পেটানো টুং-টাং শব্দে দিন ও রাতে সমান ব্যস্ততায় সময় পার করছেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার কামার পাড়ার শিল্পীরা। কোরবানির দিন যত ঘনিয়ে আসছে কামার শিল্পীদের ব্যবস্ততা তত বেড়েই চলেছে। অধিক পরিশ্রম হলেও বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই সময়ে বাড়তি রোজগারের আশায় পরিশ্রমের অবসাদ ভুলে ঈদে চকচকে নতুন নোটের আশায় কাজ করে যাচ্ছেন কামার পাড়ার শিল্পীরা। লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির অপরিহার্য এসব জিনিসপত্রের দামও এবার বেড়েছে বলে জানিয়েছে রাজিহার গ্রামের কামার শিল্পী অশোক দাশ, বাসুদেব দাশ। তারা জানান, এখন জিনিসপত্রর ক্রেতাদের অনেক ভিড়। কামারদের কেউ ব্যস্ত নতুন দা-বটি তৈরিতে, আবার কেউ ব্যস্ত পুরনো দা, বটি, ছুরি, চাপাতিতে শান (ধারালো করার কাজে) দিতে। তবে নতুন কাজের চেয়ে গৃহস্থদের কাছে পশু জবাইয়ের জন্য পুরানো দা-চাকু গুলোতেই শান দিতে বেশি আগ্রহ গ্রাহকদের। এজন্য গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশী পারিশ্রমিক দিয়ে আগে থেকেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাড়তি লোকও রেখেছেন কামার শিল্পীরা। সরেজমিনে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর বাজার, রাজিহার, গৈলা বাজার, গুপ্তের হাট বাজার, সাহেবেরহাট, বাশাইল, পয়সারহাট, ছয়গ্রামসহ বিভিন্ন হাট বাজারে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করতে দেখা গেছে কামারদের। ব্যবহার্য জিনিসপত্রের স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন তাদের তৈরী চাকু, দা বটিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেশের বিভিন্ন এলাকায়। পাইকারদের অর্ডার করা মালামাল আগেই তৈরী করে রেখেছেন কর্মকাররা। মৌসুমী ব্যবসার জন্য কোরবানির পশুর মাংস বানিয়ে বাড়তি রোজগার করতে কসাইরাও অনেকেই নতুন জিনিসপত্র বানাচ্ছেন। এই ব্যস্ততা থাকবে কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত বলে জানান কামার শিল্পীরা।
Leave a Reply