পটুয়াখালী প্রতিবেদক ॥ পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। তবে অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাদের মুখে মাস্ক নেই, সামাজিক দূরত্বও উধাও। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। গত দুই দিন জেলার কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা এমন দৃশ্য দেখা গেছে। পটুয়াখালী শহরের পাশে ব্রিজের হাট, সদর উপজেলার সেহাকাঠী হাট, হাজির হাট, বোতলবুনিয়া হাট, মৌকরন হাট, গলাচিপা উপজেলার বাদুরা হাট, গলাচিপা হাট, বাউফল উপজেলার কালাইয়া হাট, বগা হাট, মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলি-সুবিদখালী হাটে বিক্রি তুলনামূলক কম হলেও জনসমাগম ছিল উল্লেখযোগ্য। বাদুরা হাট গলাচিপা উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট। পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা ও বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার সংযোগস্থল হওয়ায় এই হাটে অর্ধ-লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। বৃহস্পতিবার হাট ঘুরে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়াই হাটে এসেছেন। দুএকজনের মাস্ক থাকলেও কথা বলার সুবিধার্থে মুখ থেকে নামিয়ে রেখেছেন। হাটের প্রবেশ দরজায় রাখা হয়নি হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। হাট কমিটির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চোখে পড়েনি।
বাদুরা হাটে গরু কিনতে আসেন আমখোলা গ্রামের বাসিন্দা আবু হানিফ। মুখে মাস্ক নেই কেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘পকেটে আছে।’ কথা হয় সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের (৫০) সঙ্গে। তিনিও মাস্ক পরেননি। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমাদের কিছুই হবে না।’
সদর উপজেলার সেহাকাঠী হাটে গরু কিনতে আসেন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল মালেক। তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করতে আসেন। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো সুযোগ নেই। দেউলী সুবিদখালী হাটের ইজারাদার আবদুল মোতালেব সিকদার বলেন, ‘সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা আছে। কিন্তু মানুষ তা মানছে না। আসলে গ্রামের মানুষ সচেতন না, তাই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা যাচ্ছে না।’ মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘হাট ইজারাদারদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে হাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ এ ব্যাপারে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে আয়োজকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা উপক্ষো করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply