বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এর ধাক্কা সামলাতে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ বেশকিছু নতুন বিধি আরোপ করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবেও জারি করা হয়েছে কঠোর বিধি। আকস্মিক এমন বিধিনিষেধে বিপাকে পড়েছেন অনেক সাধারণ মানুষ। খবর রয়টার্স।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্য একদিনের নোটিশে স্পেন থেকে আগতদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করে। এ নিয়ে স্পেন সরকার কড়া সমালোচনা করলেও ব্রিটিশ সরকার নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল জার্মানি স্পেনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। স্পেনে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্পেনের তিনটি স্থানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জার্মানি। স্থান তিনটি হলো আরাগন, কাতালোনিয়া ও নাভার।
জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। যদিও স্পেন কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে এশিয়ার করোনা মোকাবিলায় সফল দেশের তকমা পাওয়া ভিয়েতনামের উপকূলবর্তী একটি শহরে নতুন সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ওই শহরে ভ্রমণ ১৪ দিনের জন্য বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, সেখানে অবস্থান করা ৮০ হাজার পর্যটককে শিগগিরই বাড়ি ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে ধারণা করা বেশ কয়েকটি দেশে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধির নতুন রেকর্ড হয়েছে। মেলবোর্নে নতুন প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর কর্মকর্তারা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটিতে ছয় সপ্তাহের আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছেন। বাসিন্দাদের সবার জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলকও করা হয়েছে।
এদিকে হংকংয়ে নতুন করে সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে দুজনের বেশি একত্রিত হওয়ার ওপর নিষেধাজাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি রেস্তোরাঁয় খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে এবং জনসম্মুখে ফেস মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। আরব বিশ্বের ইরানে দ্বিতীয় দফায় বেশ বড়া ধাক্কা দিয়েছে করোনা ভাইরাস। দেশটিতে গত সপ্তাহে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। তবে দেশটির সরকার বলছে, তারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পুনরায় লকডাউনে ফিরে যাবে না।
বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে অন্য কথা। সংস্থাটি বলছেÑ সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান নয়। ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরার মতো প্রমাণিত কৌশল অবলম্বনের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে সংস্থাটি এটাও জানিয়েছে যে, করোনা কোনো সিজনাল সংক্রমণ নয় যে দ্রুত সেরে যাবে, বরং এটি আমাদের আরও নানাভাবে ভোগাবে।
Leave a Reply