দেশের আট বিভাগের মধ্যে করোনা ভাইরাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে সংক্রমণের হার প্রতি ১০ লাখে তিন হাজার ৬৩৭ জন। আর গোটা বিভাগের মধ্যে সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে রাজধানী। এখানে সংক্রমণের হার প্রতি ১০ লাখে ১৪ হাজার ৮২৪.২ জন। বিভাগে সংক্রমণের হারের দিক দিয়ে এর পরই অবস্থান যথাক্রমে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুরের। সংক্রমণে সর্বনিম্নে এ বিভাগে অবস্থান করছে টাঙ্গাইল জেলা। সেখানে প্রতি ১০ লাখে আক্রান্তের হার ৩৯৬.৫ জন। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি
নিয়ে গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি প্রতিবেদন-২৩’ (সর্বশেষ তিন আগস্ট পর্যন্ত পরিসংখ্যান) এর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে এ বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা জানান, বাংলাদেশে এখন প্রতি ১০ লাখে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের হার ১৪২১.৫ জন। বিভাগগুলোর মধ্যে ঢাকায় এ হার সবচেয়ে বেশি, প্রতি ১০ লাখে ৩৬৩৭ জন। আর ঢাকা মহানগরীতে এ হার প্রতি ১০ লাখে ১৪ হাজার ৮২৪.২। এ ছাড়া প্রতি দশ লাখে চট্টগ্রাম বিভাগে আক্রান্তের হার ১৪০.৭, রাজশাহীতে ৬০৮.৯, খুলনায় ৬৬৩.৫, বরিশালে ৬০৮.৮, ময়মনসিংহে ৩৫৩.৮, সিলেটে ৬৬৪.৩, রংপুরে ৩৪৭.৩।
বাংলাদেশে গত ২০ দিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায় আরও ৫০ হাজার নাম যুক্ত হয়েছে। প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পাঁচ মাসের মাথায় বর্তমানে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যাতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ইতালিকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ এখন রয়েছে ১৫ নম্বরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ৮৫১ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫০২ জনে। এদিন কোভিড-১৯ রোগে মারা গেছেন আরও ২৭ জন। এতে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ৩৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭৬০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৪ জনে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছিল তিন মাস পর গত ১৮ জুন; তার ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই তা ২ লাখ ছাড়ায়। এর পরের নতুন ৫০ হাজার রোগী শনাক্তে সময় লাগল ২০ দিন। যার মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা একদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর গত ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই মারা গেছিল সর্বোচ্চ ৬৪ জন।
এদিকে বিশ্বে মোট শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা গতকাল এক কোটি ৯১ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যাও ৭ লাখ ১৫ হাজার পেরিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল দেশটিতে ৪৮ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৯ লাখের বেশি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত, সেখানে রোগীর সংখ্যা শুক্রবারই ২০ লাখ ছাড়িয়েছে।
Leave a Reply