ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন রাস্তাঘাট। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে বানের পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পানিতে ডুবে থাকা ঘরবাড়ি এখনো বসবাসযোগ্য হয়নি। বেশিরভাগ ঘরেই রয়েছে বন্যার পানি। তাই মাচা পেতে, না হয় অন্যত্র গিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।
ঢাকার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হঠাৎ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর মতো পদ্মায়ও পানি বৃদ্ধি পায়। এতে নি¤œাঞ্চলগুলোয় বন্যা দেখা দিয়েছে। কিন্তু এখন পানি কমতে শুরু করেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দোহার উপজেলার মাহমুদপুর, বিলাসপুর, নারিশা, মুকসুদপুর ইউনিয়নের পদ্মা তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৩০ হাজার পরিবার এখনো পানিবন্দি। বেশিরভাগ বাড়ি পানিতে ডুবে আছে। কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে আছে ঘরবাড়ি। হাটবাজার, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা সর্বত্রই এখনো পানিতে থই থই করছে।
উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের রাধানগর, কুলছুরি, কুতুবপুর, রামনাথপুর, হাজারবিঘা এলাকার সড়ক ও ঘরবাড়ি বানের পানিতে তলিয়ে আছে। এ ছাড়া সুতারপাড়া মধুরচর, দোহার খালপাড়, আল-আমিন বাজার, গজারিয়া, পশ্চিম পুরসুতারপাড়া, মুকসুদপুরের পদ্মা তীরবর্তী এলাকাগুলো প¬াবিত। একই অবস্থা কুসুমহাটি ইউনিয়নের চরকুশাই, চরকুসুমহাটি, চরসুন্দরীপাড়া এলাকায়।
মাহমুদপুর এলাকার রুকন মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি কিছুটা কমছে। কিন্তু তাতে কী হবে, ঘরে তো এখনো থাকার অবস্থা নেই। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
একই এলাকার কাঁচা সবজি বিক্রেতা সবুজ বলেন, ‘রাস্তা ও বাজার এখনো পানির নিচে। তাই ব্যবসা বন্ধ। পোলাপানগো নিয়া কী করমু, কী খামু, বুঝতে পারছি না।’
নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর এলাকার আবদুল করিম বলেন, ‘এবার হঠাৎ বন্যা হওয়ায় আমাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে। বাড়িতেই মাচা বানিয়েছি। দিন এনে দিন খাইতাম। কিন্তু এখন তো আর কাজ কামনাই। আমরা এখন অসহায়।’
দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচএম সালাউদ্দিন মনজু আমাদের সময়কে বলেন, পানিতে প¬াবিত হওয়া এলাকাগুলোতে সরকারি সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply