দেশে ফেরা ৭০ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশি জীবিকাহীন হয়ে পড়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে যারা দেশে ফিরেছেন, তারা চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসহ নানা সমস্যাও রয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাব অভিবাসী কর্মীদের সুনির্দিষ্টভাবে আরও বিপদাপন্ন করেছে। বাংলাদেশের ১২ জেলায় বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত ‘র্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব নিডস অ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ইন্টার্নাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিটার্ন মাইগ্র্যান্টস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ গবেষণাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ‘রিজিওনাল এভিডেন্স ফর মাইগ্রেশন অ্যানালাইসিস অ্যান্ড পলিসি (রিমেপ)’- প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হয়েছে।
গতকাল আইওএম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে মোট ১ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশফেরত ব্যক্তির ওপর চালানো জরিপের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। আইওএম জানায়, ২০২০ সালের মে এবং জুলাই মাসে দেশের ১২টি উচ্চ অভিবাসনপ্রবণ জেলায় এ জরিপ পরিচালনা করা হয়, যার মধ্যে সাতটি জেলায় ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে।
মোট ৬৪ শতাংশ আন্তর্জাতিক অভিবাসী উল্লেখ করেন, করোনার প্রাদুর্ভাবে তাদের কর্মস্থল দেশে তথ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা পেতে তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৯ শতাংশ বলেছেন, যে দেশে তারা ছিলেন সেই দেশ ত্যাগ করতে বলায় তারা ফেরত এসেছেন। ২৩ শতাংশ জানান, তারা করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং পরিবারের কাছে ফেরত আসতে চেয়েছেন। ২৬ শতাংশ জানান, তাদের পরিবার তাদের ফেরত আসতে বলায় ফিরে এসেছেন। ৯ শতাংশ জানান, তাদের বলা হয়েছে সীমন্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং আটকে পড়ার ভয়ে তারা ফেরত এসেছেন। সাক্ষাৎকার দেওয়া ৫৫ শতাংশ তাদের ওপর শোধ না করা বর্ধিত ঋণের বোঝার কথাও জানিয়েছেন।
আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি জানান, সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ জানান, তারা আবার অভিবাসনে আগ্রহী। তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে যে দেশে কাজ করতেন, সে দেশেই আবার যেতে চান। অন্যদিকে ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আরও ভালো বেতনের চাকরি নিশ্চিতে তাদের দক্ষতা বাড়াতে আগ্রহী।
Leave a Reply