নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন, পরিচালক দিদারুল আলমসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘এই মামলার একটা সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করতে দুই বছর সময় লেগেছে। অন্যান্য সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে ১০ বছরেও বিচার শেষ হবে কি না সেটা নিয়ে আমরা সন্দিহান।’ গতকাল বুধবার মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানিকালে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম দুদকের আইনজীবীকে এসব কথা বলেন। বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, অর্থপাচার আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর। সেখানে আসামি ৫ বছর ৫ মাস ধরে কারাগারে আছেন। এখনো মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। তাহলে কি বিচার শেষের আগেই আসামির সাজা ভোগ হয়ে যাবে? ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন, পরিচালক দিদারুল আলমসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে নগরীর কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুদক। বিশেষ জজ আদালতে এই মামলার বিচার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মামলায় একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। ওই সাক্ষীর জেরা চলছে। মামলার আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল দিদারুল আলম গ্রেপ্তার হয়ে ২০১২ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন। এই মামলায় জামিন চেয়ে তিনি বিচারিক আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদন খারিজ হলে তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে রিভিশন আবেদন দাখিল করেন। গতকাল বুধবার ওই আবেদনের ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানিতে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আসামি তো অর্থপাচারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। আর অপরাধ সংঘটনে জড়িত থাকার বিষয়ে উনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, আসামি একজন মাস্টারমাইন্ড। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, ফৌজদারি মামলায় অপরাধের দায়ের বিষয়টি পৃথক করতে হয়। কারণ, এর সঙ্গে শাস্তির বিষয়টি জড়িত। অপরাধের দায় অনুযায়ী সাজা দিতে হয়। অপরাধ সংঘটনকালে আসামি কত টাকা লেনদেন করেছেন সেটা বলুন। দুদকের আইনজীবী বলেন, আসামির বিরুদ্ধে একাধিক চার্জ (অভিযোগ) আনা হয়েছে। আর এখানে মূল বিষয় হচ্ছে অর্থপাচার। আসামি মানুষকে প্রলুদ্ধ করেছেন বলেই এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আদালত বলেন, প্রলুদ্ধ করার জন্য আইনে পৃথক সাজা রয়েছে কি? সাজা তো একটিই। এ পর্যায়ে আসামির আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. মাইনুল ইসলাম বলেন, আসামি ডেসটিনির চেয়ারম্যানও নন। তিনি ডায়মন্ড বিল্ডার্সের সিইও। ইতমধ্যে ৫ বছর ৫ মাস হাজতবাস করছেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আসামির জামিন আবেদনটি তিন মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার রেখে আদেশ দেন।
Leave a Reply