বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি এতিম শিশুর অধিকার নিশ্চিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিধবা মা প্রতারণা ও জালিয়াতি করেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে যশোরের প্রতারক মিঠু
বুকের দুধ নিয়ে যত ভুল ধারণা

বুকের দুধ নিয়ে যত ভুল ধারণা

শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প কিছু নেই। এর শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজনবিদিত। এটি এমন এক জিনিস, যার কোনো খারাপ দিক নেই। কিন্তু বুকের দুধ নিয়ে রয়েছে নানা ভুল ধারণা ও কুসংস্কার। ফলে মায়ের ওপর চলে আসে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা- এটা করা যাবে না, ওটা ধরা যাবে না, এটা খাবে না তো, ওটা ভালো না ইত্যাদি। কোনো সমস্যা তো মায়ের দোষ, দুধের দোষ- এই ধারণা থেকে যেন বেরই হতে পারছিনা আমরা। এমন কিছু ভুল ধারণাই আজকের আলোচ্য বিষয়।

অভিজ্ঞতা ও প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাবে নতুন মা এমনিতেই উদ্বিগ্ন ও অস্থির থাকেন। সন্তান একটু কান্না করলেই মনে হয়, সন্তান বুঝি ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে না। আসলে তা ঠিক নয়। ক্ষুধা ছাড়াও কান্না করার আরও অনেক কারণ রয়েছে। লক্ষ্য রাখুন, ওজন বাড়ছে কিনা আর দিন-রাত মিলিয়ে ছবার বা তার বেশি প্রস্রাব করে কিনা।

শালদুধ খাওয়ানো উচিত নয়, ফেলে দিতে হবেÑ এমন কুসংস্কার খুব ভয়ঙ্কর। শালদুধ হলো শিশুর প্রথম খাবার ও প্রথম টিকা। এতে প্রচুর প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে। আছে এমন সব উপাদান, যা রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। শিশুর মস্তিষ্ক গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

বুকের দুধ না দিয়ে মধু, মিছরির পানি, শরবত বা গ্লুকোজের পানি দেওয়া বিপজ্জনক। এতে শিশুর ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়। আদর্শ কাজ হলো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব- অবশ্যই একঘণ্টা আগে বুকের দুধ খাওয়ানো।

অনেকেই মনে করেন, মা ঝাল-মসলা দিয়ে খাবার খেলে শিশুর পেটব্যথা করবে, গ্যাস হবে। অনেকের ধারণা, ঘি ও সুজি খেলে মায়ের বুকে বেশি দুধ হবে। তবে ডাল, মটরশুঁটি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না- এ ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মা ঝাল-মসলা চায়নিজ-দেশি যে কোনো খাবারই খেতে পারেন। কাজেই পছন্দসই খাবার না দিয়ে মাকে দুর্বল করবেন না। কারণ দুর্বল মা শিশুকে প্রয়োজনীয় দুধ দিতে পারবে না। ফলাফল শিশুর নানান রকম সমস্যা তৈরি হওয়া।

মায়ের বুকের দুধের সঙ্গে উপরি, আলগা, তোলা দুধ কিংবা সুজি বা এ জাতীয় খাবার দিলে সন্তানের পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য ভালো হবেÑ এমন ধারণা সমাজে। আসলে মায়ের বুকের দুধ এমনই এক সুষম খাদ্য, যা প্রথম ৬ মাস খাওয়ালে সে সময় অন্য কোনো খাবার, পানীয়, মধু, চালের গুঁড়ো, সুজি, চিনির পানি, এমনকি সাধারণ পানিরও প্রয়োজন নেই। বিদেশি নামিদামি বেবি ফুড খেলে শিশুর পুষ্টি বেশি হবেÑ এটি ভুল ধারণা।

অনেকে মনে করেন, সিজারিয়ান শিশুকে বুকের দুধ দেওয়া যাবে না। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। অপারেশনের পর পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে নিয়ে গিয়ে শিশুকে সহজেই বুকের দুধ খাওয়ানো যায়।

বুকে দুধ কম এলে অনেক ক্ষেত্রে মাকে ‘অপয়া’ হিসেবে অপবাদ দেওয়া হয়। এমন অপবাদে মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে বুকে দুধ নাও আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে মা এবং পরিবারের সবাইকে মনে রাখতে হবে, সন্তান জন্মগ্রহণের পর দুধ আসা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং মায়ের পুষ্টি যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে দুধ আসবে। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও মানসিক অশান্তি মায়ের বুকের দুধ তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।

অনেক মা ও বুকের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার ভয়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান না। অথচ পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হলোÑ মায়ের কোলে শিশুর হাসি। অযথা এ চিন্তা আপনার শিশুর হাসি কেড়ে নিতে পারে। স্তন ক্যানসারের ভয় রয়েছে অনেক মায়ের। আসল সত্য হলো, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে স্তন এবং সারভাইক্যাল (জরায়ুমুখ) ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।

নবজাতক অনেক সময় ঘন ঘন, অল্প-অল্প পায়খানা করে, যা স্বাভাবিক ঘটনা। কেউ কেউ একে ডায়রিয়া বলেন। আবার সত্যি সত্যি শিশুর ডায়রিয়া হলেও তারা মায়ের দুধকে দায়ী করেন। অনেক সময় দুধ স্তনে জমে শক্ত হয়ে যায়, প্রচুর ব্যথা হয়। অনেকে দুধে বাতাস লাগা বলেন। ঝাড় ফুক, কবিরাজি করান। মাটির প্রলেপ লাগায় অনেক মা। এটা অন্ধ কুসংস্কার। বুকের দুধ জমে গেলে এবং তা টিপে বের করে দিলে বেশিরভাগ সময়ই এ সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে যায়।

অনেক মা হেপাটাইটিস-বি পজিটিভ। কেউ কেউ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অনেকেই এদের ক্ষেত্রে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। ধারণা এই যে, শিশুর জন্ডিস হবে, ডায়াবেটিস হবে। এটাও ভুল ধারণা। মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। বরং বুকের দুধের সঙ্গে অন্য কিছু খাওয়ালে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। মায়ের জ্বর, কাশি, সর্দি, ডায়রিয়া, অ্যালার্জিসহ সব সাধারণ অসুখেও বুকের দুধ খাওয়াতে পারবে। বুকের দুধের মাধ্যমে এসব রোগ মা থেকে শিশুর আক্রান্ত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ফিডারে কৌটার দুধ খাওয়ালে শিশু ভালো খায়Ñ এ কথা প্রায়ই শোনা যায়। কথা সত্য। কারণ কৌটার দুধ খেতে বুকের দুধের চেয়ে সুস্বাদু আর ফিডারের নিপল দিয়ে খাওয়া অনেক সহজ। কিন্তু এর ফলে শিশু আর বুকের দুধ চোষে না, যা মায়ের বুকের দুধ তৈরি কমিয়ে বা বন্ধ করে দেয়। খুঁজলে এমন আরও ভুল ধারণা পাওয়া সম্ভব। আমাদের এসব ভুল ও বুকের দুধের বিরোধী ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ মায়ের দুগ্ধপান সুস্থ জীবনের বুনিয়াদ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com