শাহজাহান, রাজীব ও আব্দুল্লাহ নামে তিন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে এ তিনজনকে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ আমাদের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন এপিবিএন সদস্য হলেন শাহজাহান, রাজীব ও আব্দুল্লাহ। তিনজনের মধ্যে শাহজাহান এপিবিএনের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। রাজীব ও আব্দুল্লাহ কনস্টেবল পদে নিযুক্ত ছিলেন। তাদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এর আগে আজ সকালে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা তিনজনই ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন।
আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, ‘সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। আজ সকাল ১০টার দিকে কারাগারে থাকা রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘আজ মঙ্গলবার ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। কিন্তু র্যাবের একটি দল ওসি প্রদীপসহ তিনজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে। একইভাবে ওসি প্রদীপকে আমরাও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগারে পৌঁছেছি। যেহেতু তাকে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন ছিল, সেহেতু পুরো বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবহিত করেছি। তাদের নির্দেশে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো: রাশেদ। এ নিয়ে সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। আগের গ্রেপ্তার সাতজন হলেন- উপপরিদর্শক (এসআই) লিটন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়ার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দীন ও মোহাম্মদ আইয়াস।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় হয় টেকনাফ থানায়। মামলা দুটির আসামি ছিলেন- সিনহার সহকর্মী সিফাত ও শিপ্রা। বর্তমানে তারা জামিনে মুক্ত আছেন।
গত ৫ আগস্ট বাদী হয়ে টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন।
Leave a Reply