করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। ভারতেও এ ভাইরাসটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এরই মাঝে দেশটির বিহার রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। আগামী নভেম্বরে হতে যাওয়া এ নির্বাচনের বিষয়ে গতকাল শুক্রবার বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, এ বছর বিহারের নির্বাচনের পর আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ কয়েকটি রাজ্যে ভোট হওয়ার কথা। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় উপ-নির্বাচন রয়েছে।
ভারতের নির্বাচন কমিশন, ভোটগ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াতেই করোনা মোকাবিলার ব্যবস্থা করার কথা বলেছে। এর জন্য রাজ্য স্তরে এবং প্রতিটি বিধানসভা স্তরে একেকজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। বাড়তি ভোট কর্মী নিয়োগ করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে যাতে তারা যাতায়াত করতে পারেন, তার জন্য বাড়তি গাড়িরও ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায়।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে-
১. নির্বাচন সংক্রান্ত সব কাজের সময়ে আবশ্যিকভাবে মাস্ক পড়তে হবে।
২. প্রতিটি বুথ ভোটের আগের দিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ভোটের জন্য এমন জায়গা বাছতে হবে যথেষ্ট বড়, যাতে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা যায়।
৩. বুথে ঢোকার আগে প্রত্যেক ভোটারের তাপমাত্রা মাপা হবে। যাদের তাপমাত্রা বেশি থাকবে, তাদের ফিরিয়ে দিয়ে ভোটগ্রহণ পর্বের একেবারে শেষ ঘণ্টায় আসতে বলা হবে। প্রত্যেক ভোটারকে গ্লাভস দেওয়া হবে। সেটা পড়েই তাকে নাম সই করতে হবে এবং ইভিএমের বোতাম টিপতে হবে।
৪. যাদের বয়স ৮০’র বেশি,যারা করোনা মোকাবিলার জন্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত এবং যাদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হবে।
৫. মনোনয়ন দাখিল করার গোটা প্রক্রিয়াই অনলাইনে করা যেতে পারে। যদি সশরীরে হাজির হয়ে কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করতে চান, তাহলে মাত্র দুজন সঙ্গীকে নিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে তাকে রিটার্নিং অফিসারের কাছে যেতে হবে।
৬. প্রচারের জন্য রোড শো করা যেতে পারে কিন্তু সর্বাধিক পাঁচটি গাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করতে হবে, প্রার্থীর সঙ্গে সর্বাধিক পাঁচজন ব্যক্তি থাকতে পারবেন।
৭. নির্বাচন কর্মীদের জন্য ফেস মাস্ক, স্যানিটাইজার, ফেসশিল্ড এবং গ্লাভস দেওয়া হবে। বাড়তি কর্মীও নিয়োগ করা হবে, যাতে কারও করোনা লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পরিবর্তিত কর্মীকে কাজে লাগানো যায়।
বিহারে নির্বাচন এগিয়ে এলেও ক্ষমতাসীন জোট ছাড়া প্রায় সব বড় রাজনৈতিক দলই ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল। তবে নির্বাচন কমিশন নতুন নির্দেশিকা জারি করার ফলে মনে করা হচ্ছে যে সময় মতোই হয়তো ভোট হবে।
উল্লেখ্য, বিহারে সোয়া এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। রাজ্যটিতে মোট ৫৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত মারা গেছে।
Leave a Reply