মুলাদী প্রতিনিধি ॥ মুলাদীতে আড়িয়ালখাঁ ও জয়ন্তী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অব্যাহত নদী ভাঙনে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ১২টি গ্রাম। নদীর পানিবৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় নদী গর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে উপজেলার ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি মাদরাসা, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নদী শাসন না হলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে হারিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জানাগেছে, উপজেলার আড়িয়ালখাঁ নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর, ঘোষেরচর, কাচ্চিচর, পশ্চিম তেরচর ভাঙ্গারমোনা, পশ্চিম সেলিমপুর, উত্তর সেলিমপুর, পশ্চিম চরকালেখান, নাজিরপুর বয়াতী বাড়ির অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। জয়ন্তী নদীর ভাঙনে উপজেলার চরমালিয়া, বালিয়াতলী, ঘুলিঘাট, আলিমাবাদ গ্রামের অনেকাংশ ভেঙে গেছে। নদী ভাঙনের ফলে গ্রামের মানচিত্র ক্রমান্বয়ে ছোট হচ্ছে। মুলাদী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামরুল আহসান জানান আড়িয়ালখাঁ নদীর ভাঙনে তার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চরলক্ষ্মীপুর ফাযিল মাদরাসা, তেরচর ভাঙ্গারমোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে রয়েছে।
নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হাসানাত জাপান জানান নদী ভাঙনে ঘোষেরচর দাখিল মাদরাসা, কাচ্চিচর দাখিল মাদরাসা, নাজিরপুর বন্দর ঝুঁকির মুখে রয়েছে। বাটামারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম সিকদার জানান আড়িয়ালখাঁ ও জয়ন্তী নদীর ভাঙনে তাঁর ইউনিয়ন সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যেতে পারে। নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে এ বি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাটামারা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সফিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা হিমু মুন্সী জানান, মুলাদী উপজেলায় তার ইউনিয়ন সবচেয়ে জনবহুল এলাকা। জয়ন্তী নদীর ভাঙনে কয়েক হাজার পরিবার ভিটেমাটি হালিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙনে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুর দাফনকারী সাবেক যুগ্ম সচিব মরহুম আ: কাদেরের কবরটিও বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সফিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অতি দ্রুত নদী শাসন করে ভাঙন রোধ করা প্রয়োজন।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ২০১৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এবং বরিশাল-৩ আসনের এমপি আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া টিপু ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সফিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষার জন্য ৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ও বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু নদীর ব্যাপক ভাঙনে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। মুলাদী-বাবুগঞ্জ আসনের এমপি আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া টিপু জানান, নদী ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কথা হয়েছে। ভাঙন রোধে বাটামারা ও নাজিরপুর ইউনিয়নের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বরাদ্দকৃত টাকায় কাজ শুরু করার কথা রয়েছে।
Leave a Reply