সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ক্লিনিকের ভুল রিপোর্টের ভিত্তিতে হাজিরা খাতুন (১৮) নামের এক তরুণীর পিত্তথলি কেটে বাদ দিলেন কলারোয়া শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের মালিক ও চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন।
ভুল অপারেশনের ফলে জীবন নিয়ে ঝুঁকিতে থাকা তরুণীর ভাই খায়রুল বাসার এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী জেরিন কান্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তরুণী হাজিরা খাতুন উপজেলার চিতলা গ্রামের জামাল সরদারের মেয়ে।
তরুণীর ভাই খায়রুল বাসার বলেন, ‘গত ১৩ আগস্ট পেটব্যথা ও বমির কারণে আমার বোনকে কলারোয়ায় অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। পরে ভর্তি থাকা অবস্থায় ১৫ আগস্ট হাসপাতালের চিকৎসকদের পরামর্শে বোন হাজিরাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষার জন্য পাশের মুন্না ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। পরীক্ষার পর মুন্না ডায়াগনস্টিকের ল্যাব ইনচার্জ খান মেহেদী রাসেল বলেন, ‘‘আপনার বোনের পিত্তথলিতে পাথর জমেছে, দ্রুত অপারেশন করতে হবে’’।’
তিনি বলেন, ‘আমার বোনের অপারেশন করানোর জন্য গত ২২ আগস্ট তাকে কলারোয়া শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। ওই দিন রাতেই ক্লিনিকের চিকিৎসক ও মালিক ইসমাইল হোসেন অপারেশন করেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘আপনার বোনের পিত্তথলিতে কোনো পাথর নেই;তবে রিপোর্টের ভিত্তিতে অপারেশন করায় পিত্তথলি কেটে ফেলতে হয়েছে’’।’ বর্তমানে হাজিরা খাতুন ওই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।
খায়রুল বাসার আরও বলেন, ‘এই ক্লিনিক-ডাক্তার সিন্ডিকেটের কারণে আজ আমার বোন জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। এদের কঠোর শাস্তি ও সঠিক বিচারের দাবি জানিয়ে ২৬ আগস্ট কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে ক্লিনিকের ইনচার্জ সালাউদ্দীন হোসেনসহ অন্যরা আমাকে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে জানতে মুন্না ডায়াগনস্টিকের ল্যাব ইনচার্জ খান মেহেদী রাসেলকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের মালিক ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাষক ডা. ইসমাইল হোসেন জানান, রোগীর স্বজনদের নিয়ে আসা মুন্না ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আলট্রসনোগ্রাম রিপোর্টের ভিত্তিতে এবং রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। অপারেশনের পর রোগীর পিত্তথলিতে ইনফেকশন পরিলক্ষিত হলেও পাথর পাওয়া যায়নি।
ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘পিত্তথলির পাথর অপারেশের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পিত্তথলি কেটে ফেলতে হয়।’ অপারেশনে কোনো ভুল হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘ত্রুটিপূর্ণ রিপোর্টের কারণে এমনটি হয়েছে। মেয়েটি এখন সুস্থ রয়েছে।’
এ বিষয়ে কলারোয়ার ইউএনও মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply