দখিনের খবর ডেস্ক ॥ আগস্ট, শোকের মাস শেষ না হতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় আমুল পরিবর্তন আসছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটাসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ভাগ্যের সিঁকে ছিড়ে পড়তে পারে। আবার কারও কারও কপাল খুলে যেতেও পারে, এমন সম্ভবনায় বরিশাল অঞ্চলের দুইজন প্রভাবশালী নেতা নয়া মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন। সরকারের ভেতরে ও বাইরে এনিয়ে গুঞ্জনে ঢাকার একাধিক সূূূূত্র ইঙ্গিত দিয়ে বলছে, ঝালকাঠির আমির হোসেন আমু ও ভোলার তোফায়েল আহম্মেদ গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত। সেই সাথে আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরীও মন্ত্রিত্বের নতুন স্বাদ পেতে পারেন। এই তিন প্রভাবশালী নেতা ইতিপূর্বে আ’লীগ সরকারের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমান সরকারের অধীনে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়লাভের পর এই তিন নেতাকে বাদ দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করে। তখন আ’লীগের হাইকমান্ডের ভাষ্য ছিল, সময়ের বাস্তবতায় তাদের মন্ত্রিসভার বাইরে রাখা হয়েছিল। তবে দলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রেখে তাদের কর্মপন্থা মূল্যায়ন চলছিল।
সূত্রের ভাষ্যের মতে, বিশেষ করে করোনা দুযোর্গকালীন মতিয়া চৌধুরী ব্যাপক ভুমিকা রাখায় দলের নীতি-নির্ধারক মহলে প্রসংশিত হয়েছেন। আর আগেও তাকে বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে সরব থাকতে দেখা গেছে। সেই মূল্যায়ন থেকেই মতিয়া চৌধুরী তিন দফা আ’লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
এদিকে ক্ষমতাসীন জোট ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহম্মেদকে দেশের ক্রান্তিকালে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসার প্রয়োজনীতা উপলব্ধি করায় তাদের দুজনকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি অকেটাই চূড়ান্ত। এর আগে আমু শিল্প এবং তোফায়েল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। রাজধানী ঢাকার ওই সূত্রটি আরও জানায়, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস দেশে ছড়িয়ে পড়লে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এবং ব্যর্থতার আলোকেই মন্ত্রিসভা রদবদলে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত সিদ্ধান্তে অগ্রসর হলে সম্প্রতি তার আলামত দলের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
কিন্তু মুজিব জন্মশতবর্ষ এবং শোকের মাস আগস্ট সামনে আসায় প্রধানমন্ত্রী তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কিছুটা সময় নিয়েছেন, সেই সাথে কাকে কোথায় বসানো যায় তার একটি ছক এঁকে ফেলেন। সেক্ষেত্রে আমু ও তোফায়েলের বিচক্ষণতা মূল্যায়ন পাশাপাশি বিতর্কিতদের প্রত্যাহার করে মন্ত্রিসভা নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা অত্যাবশ্যক হিসেবে মনে করছেন আ’লীগ সভানেত্রী। উল্লেখ্য, আ’লীগ সরকারের এই পরিবর্তনে কারা যোগ্য, স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার দুরদর্শিতা রয়েছে এ সমস্ত নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। তবে এই মন্ত্রিসভা পরিবর্তন কবে, কিভাবে হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে সরকারের কোন মহলই ধারণা দিতে পারছে না। সবই অনুমান নির্ভর তথ্য দিয়ে বলছে, আগস্টের শেষ দিন আজ সোমবার অতিবাহিত হওয়ায়র পর মন্ত্রিসভা রদবদল যেকোন সময় ঘটতে যাচ্ছে, তেমনটি আভাস পাওয়া যায় বিভিন্ন নেতাদের দৌড়ঝাপে। তা থেকে গুঞ্জন ডালপালা মেলে জোরালো রুপ নিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মন্ত্রিসভা রদবদলে অন্যতম কারণ হতে পারে স্বাস্থখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালিকের ব্যর্থতাসহ আর ২/৩ জন বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় সরকার স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নিয়েছে। যদি এই উদ্যোগের খবর সত্য হয় তাহলে চলতি সপ্তাহে সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল দেখা যেতে পারে। অবশ্য আমু এবং তোফায়েলের সাথে এ সম্ভবনা নিয়ে কথা বলার তাগিদে কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাদের সেলফোনে সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তারা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন, তাদের ঘনিষ্টজনেরা জানিয়েছেন।
Leave a Reply