সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
মানুষের কোলাহলে ফিরছে দূষণও

মানুষের কোলাহলে ফিরছে দূষণও

শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের জেরে বিশ্বজুড়েই পরিবেশের অবস্থা সঙ্গীন। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি সামলাতে লকডাউন জারি করা হয় প্রায় প্রতিটি দেশে। সব ধরনের কলকারখানা বন্ধ থাকায় পরিবেশ দূষণ কমে যায়। পরিবেশ সজীব হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় বদলে গিয়েছিল বাংলাদেশের চিত্রও। রাজধানীর বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল সর্বনিম্ন। নদ-নদীগুলোয়ও অপেক্ষাকৃত বিশুদ্ধ পানির ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। করোনা সংক্রমণ পুরোপুরি বন্ধ না হলেও জীবনের তাগিদে কাজে ফিরেছে মানুষ। ফলে পরিবেশ দূষণের অনুষঙ্গগুলো আবার চালু হয়েছে। শিল্প-কারখানাসহ নানা বর্জ্যে ফেলা হচ্ছে নদীতে। ময়লা-আবর্জনা, পয়ঃবর্জ্য, গাড়ি, কলকারখানার কালো ধোঁয়ায় ঢাকায় ফিরেছে দূষণ। চলতি মাসের প্রথম দিনে বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষ দশে উঠে আসে রাজধানী। গতকালও ছিল ২৪ নম্বরে। লকডাউনের সময় পানির মান কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও গত কিছুদিন ধরে ফিরে গেছে পুরনো অবস্থায়ই। লকডাউন কাটিয়ে সচল হয়েছে রাজধানী ঢাকা। খুলে দেওয়া হয়েছে অফিস-আদালত। কলকারখানাও ফিরে গেছে উৎপাদনে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা,

গাড়ির কালো ধোঁয়া এখন নিয়মিত চিত্র। রাজধানী ও এর আশপাশে বিভিন্ন উন্নয়নকাজ চলমান। পাশাপাশি শুরু হয়েছে বিভিন্ন বাড়ি নির্মাণ কোম্পানির কাজ। অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও নানা উন্নয়ন কাজ করছেন। এসব উন্নয়নকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলাও পরিবেশ বিপর্যয়ে ভূমিকা রাখছে। রয়েছে রাস্তায় রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্ট ধুলা, বিভিন্ন স্থানে জমা করে রাখা ময়লাও। ফলে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে। একই অবস্থা ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর ক্ষেত্রে। কলকারখানার বর্জ্য, পয়ঃবর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচল। বর্তমানে সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ায় নৌযানের ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন নদীতে ফেলা হচ্ছে। নোঙর করা বিভিন্ন নৌযানের নিঃসৃত তেল বা তেলজাতীয় পদার্থ পানিতে মিশে দূষিত হচ্ছে নদী। এ ছাড়া নদীকে কেন্দ্র করে ঢাকার চারপাশে বড় বড় বাজারের সব ধরনের বর্জ্যও নদীতে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকার নদীগুলোর চারপাশে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার ইটভাটা। এসব ইটের ভাটার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। পাশাপাশি কালো ধোঁয়ার কারণে দূষিত হচ্ছে নদী।

গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এয়ার ভিজ্যুয়াল ইনডেক্সে ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ৮০। এই অবস্থায় বায়ুকে সহনীয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বছরের অন্য সময়ে বায়ুদূষণে শীর্ষ স্থানে থাকলেও তৎকালীন সময়ে ঢাকা ছিল ২৬ নম্বরে। এ ছাড়া মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সূচক ছিল মাত্র ৬৮। যা স্বাস্থ্যকর বায়ু বলে উল্লেখ করা হয়। চলতি দশকে এর চেয়ে ভালো বায়ুর পরিবেশ আর কখনো হয়নি।

কিন্তু লকডাউন তুলে নেওয়ার পরপরই এ পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। চলতি সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে বায়ুদূষণের মাত্রা ১১৩ হয়। ফলে বায়ূদূষণে শীর্ষ ১০-এ আবার উঠে আসে ঢাকা। গতকাল ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ১০৩ পর্যন্ত ওঠে। এটি ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া পূর্বাভাসে এ পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে উল্লেখ করা হয়। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বায়ুদূষণের মাত্রা ২২০ পয়েন্ট ছিল। ফলে বায়ুদূষণের শীর্ষে উঠে আসে ঢাকা।

এদিকে লকডাউনের সময়ে ঢাকার আশপাশের পাঁচটি নদ-নদীর পানির মানের উন্নতি হলেও এখন আবার দূষণ হচ্ছে। লকডাউনের সময়ে বিভিন্ন নিরিখে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদের পানির মান দ্বিগুণেরও বেশি উন্নত হয়েছিল। কিন্তু এখন পানি দূষণ পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব বলেন, প্রতিটি কারখানাকে বলা হয়েছে পরিবেশ দূষণ রোধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ধুলা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলতে। কিন্তু কেউই তা মেনে চলে না। তবে লকডাউনের সময় পরিবেশের উন্নতি হয়। এখন কারখানা আবার চালু হয়েছে, আবার পরিস্থিতির অবনতি হবে। তিনি আরও বলেন, দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয় না। ফলে এই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। সাধারণ জনগণের সচেতনার চেয়ে প্রশাসনিক ভূমিকা এখানে বেশি কার্যকর হবে।

নদীদূষণ পরিমাপে অন্যতম এক মাপকাঠি হলো পানির দ্রবীভূত অক্সিজেনের (ডিও) মান নিরূপণ। প্রতি লিটার পানিতে কমপক্ষে ৫ মিলিগ্রাম ডিও থাকলে ওই পানি মানসম্পন্ন বলে বিবেচনা করা হয়। এই মান যত বেশি থাকবে তত ভালো। গত এপ্রিল মাসে বুড়িগঙ্গায় মিরপুর ব্রিজের কাছের পানিতে ডিওর পরিমাণ ছিল ২.২০ মি. গ্রাম। যা বর্তমানে কমে ১.৮ মি. গ্রাম হয়েছে। গাবতলী ব্রিজের কাছে তুরাগ নদে ডিওর পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৩ দশমিক ২ মি. গ্রাম। বর্তমানে নেমে গেছে ২.৫ মি. গ্রামে। শীতলক্ষ্যায় ডেমরা ঘাটে ডিও ছিল ১ দশমিক ৩১ মি. গ্রাম, যা বর্তমানে ১ মি. গ্রাম হয়েছে; বালু নদের হোসেন ডায়িং এলাকার পয়েন্টে ০ দশমিক ৩২ মি. গ্রাম ডিওর পরিমাণ থাকলেও এখন ০.২৫ রয়েছে। পাঁচ নদ-নদীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মান বেড়েছিল ধলেশ্বরী নদীর পানির। এ নদীতে এ বছর এপ্রিলে ডিওর পরিমাণ হয়েছিল ৭ দশমিক ১। কিন্তু এখন ৫-এ নেমে এসেছে।

পানি বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর দূষণের মূল দুই উৎসের অন্যতম শিল্পবর্জ্য। করোনার সাধারণ ছুটির সময় কলকারখানা বন্ধ ছিল। তাই স্বভাবতই পানির মান বাড়বে, এটা প্রত্যাশিত। তবে দূষণের আরেক উৎস ওয়াসার পয়ঃবর্জ্য বন্ধ হয়নি। এটি বন্ধ হলে পানির মান আরও ভালো হতো।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একেএম রফিক আহম্মদ বলেন, লকডাউনের সময় আমরা কিছু নমুনা নিয়েছি। প্রতিটি নিরিখেই ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলোর পানির মানের উন্নতি লক্ষ করেছি। মানুষের নানাবিধ কাজ কমে যাওয়ার ফলেই এই উন্নয়ন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বায়ুর মান ও নদীগুলোর পানির মান বৃদ্ধি একটি ভালো খবর। একে আমরা ধরে রাখতে চাই। এ জন্য অবশ্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। তবে আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। বিভিন্ন অভিযান ও কার্যক্রম চালু রাখব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com