স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগরে শুরু হয়েছে স্নানোৎসব। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম এ উৎসবে যোগ দিতে গতকাল শনিবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পুণ্যার্থী আসছেন দুর্গাসাগরে। সকাল থেকেই পুণ্যার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মাধবপাশার দুর্গাসাগর পাড়ের এলাকা।
চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে এই দুর্গাসাগরে স্নান করে পাপ থেকে মুক্তি লাভের আশায় প্রতি বছরই বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আসেন। পুণ্যার্থীরা গঙ্গাদেবীর চরণে আত্মসমর্পণ করে পূজার্চনা, প্রার্থনাসহ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পাপমুক্তির বাসনায় স্নান সমাপ্ত করেন। এবারের তিথি দু’দিন হওয়ায় ভক্তরা শান্তিপূর্ণভাবে স্নান করতে পারছেন। শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিট থেকে পরদিন রোববার সকাল ৭টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত তিথি রয়েছে। ফলে শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া স্নানোৎসব রোববার সকালে শেষ হবে। উৎসবে বাড়তি আনন্দ যোগাতে সাগর পাড়ের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার। যেখানে মুড়ি-মুড়কি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি নাগরদোলা, দোলনাসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের নানা আয়োজনও রয়েছে। এদিকে উৎসবকে ঘিরে এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে। যা বিগত সময়ের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুণ্যার্থীরা। প্রায় ২ শতাব্দী ধরে পুণ্যার্থীরা দুর্গাসাগরে স্নান উৎসবে যোগ দিয়ে আসছেন। ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্রদীপ পরগণার তৎকালীন রাজা শিব নারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট নিরসনে স্ত্রী দুর্গারানীর নামানুসারে দুর্গাসাগর দীঘি খনন করেন। যা পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো খনন করা হয়। ৪৫ দশমিক ৫৫ একর জমির মধ্যে দ্বীপসহ জলভাগের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৮ একর এবং স্থলভাগের পরিমাণ ১৮ দশমিক ০৪ একর। দীঘির চারপাশে ও মাঝের দ্বীপটিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, ওষধি ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে। এছাড়া দীঘির চারপাশ দিয়ে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে রয়েছে। তিনঘাট ও মধ্যখানে দ্বীপবিশিষ্ট এ দীঘি সর্বশেষ ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সংস্কার করা হয়।
Leave a Reply