এম. আরিফুল ইসলাম ॥ মশার যন্ত্রনায় অতিষ্ট নগরবাসী। ঔষধ নাই এক বছর। সিইও বলছে ক’দিন আগেও ঔষধ দেয়া হয়েছে। আগামী বাজেট ছাড়া বরাদ্দ মিলছে না মশা নিধনের ঔষধ। তবে বিসিসি থেকে বলা হচ্ছে এই মেয়রের আমলে আর ঔষধ ক্রয় করা হচ্ছেনা। যেহেতু মশার ঔষধের বাজেটটি নিজেস্ব ফান্ড থেকে দেয়া হয়, সেক্ষেত্রে বিসিসির অর্থনৈতিক দূর্বলতার কারনে সঠিক সময়ে মশার ঔষধ ক্রয় করা হয়না। তবে এ বছর মশার ঔষধ ক্রয় করা না হলেও গত বছরের অবশিষ্ট কিছু ঔষধ দিয়ে চলতি বছরে কিছু সময়ে প্রশাসনিক ও ভিআইপিদের বাসায় ঔষধ দেয়া হয়েছ্ েতাও নেই প্রায় বছর খানেক ধরে।
এই অচল অবস্থার বিষয় জানতে চাওয়া হলে বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মো মতিউর রহমান দৈনিক দখিনের খবরকে জানান, এক সিজনে ঔষধ দিয়ে গোটা বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মশা নিধনের জন্য প্রায় ৪০/৫০ লাখ টাকার ঔষধ লাগে। আর এক বছরের জন্য ১ কোটি টাকার ঔষধ প্রয়োজন হয়। যেহেতু টাকার উৎস আসে বিসিসি‘র নিজেস্ব ফান্ড থেকে তাই এ বছর আর ঔষধ কেনা হবেনা। ফলে বর্তমান মেয়রের মেয়াদকালের শেষ বছরের বিসিসির আওতায় এলাকার বাসিন্দারা মশার যন্ত্রনায়ই বছর পাড় করবে। আর ঈদের সময়েও এইক ধারায় চলবে বিসিসির কার্যক্রম। মশার যন্ত্রনায় নগরবাসী যখন অস্থির তখন তীব্র ক্ষোপ প্রকাশ কররেন মহাবাজ উলালঘুনী এলাকার মাওলানা সাব্বির বিশ্বাস। তিনি বলেন এমন শহরে বাস করি যেখানে নাগরিক সেবার নামে মিথ্যাচার করা হয়। রহমতের এই মাস পবিত্র রমজানে ধর্মপ্রান মুসল্লীরা সারা দিন রোজা রাখার পরে সন্ধ্যার পরে যখন তারাবী নামাজ পড়তে মসজিদে যায় তখন শুরু হয় মশার উপদ্রব। সাধারন মুসুল্লিদের নামাজ পড়তে অনেক কস্ট সহ্য করতে হয়। বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত মশার কোন ঔষধ দেয়া হযনি। কিন্তু বছর শেষে বিসিসি ঠিকই তাদের নির্ধারিত ভ্যাট ট্যাক্স নিয়ে নেয়। এমনিভাবে শুধূ তিনিই নয় নগরীর প্রতিটি মানুষের অভিযোগ বিসিসি’র দিকে। কিন্তু টনক নড়েনা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের। কারন তারাতো বেশ আয়েশেই বসবাস করছে। তাছাড়া প্রতিটি ড্রেন সঠিক সময়ে পরিস্কার না করায় ড্রেন থেকেই মশার সৃষ্টি হয়। এ বিষয় পরিচ্ছন্ন বিভাগ ভালোভাবে অবগত থাকলেও তারাও বর্তমানে নিরব ভুমিকা পালন করছে। যদিও পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও তাদের দাবি তুলে ধরে বলেন বিসিসি সাধারন শ্রমিকদের বেতন ভাতা যেভাবে বকেয়া রাখে তাতে নগরী আরো স্থবির হওয়ার কথা। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের সব স্থানে উন্নয়নের ছোয়া লাগলেও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তেমন উন্নয়ন চোখে পড়েনা। এর কারন খুজে বের করে কেহই সমাধান না করায় নগরবাসীর দুর্ভোগ যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। বর্তমান সময়ে পবিত্র রমজান মাস এখন প্রায় সকল মসজিদেই তারাবীর নামাজ আদায় করা হয়। রমজানের পরেই আসছে ঈদ। আর এই ঈদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাড়ীর টানে বাড়ী আসবে হাজার হাজার মানুষ। তাদের একটু ভাল পরিবেশের সুযোগ করে দেয়ার জন্য খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে বিসিসি’র মশা নিধনের মহতি উদ্যোগ। এ ব্যাপারে বিসিসি‘র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান দৈনিক দখিনের খবরকে জানান, বিসিসির যেসকল কর্মকর্তারা বলে এক বছর যাবত মশার ঔষধ নেই তারা মিথ্যা বলেছে। কারন গত ক’দিন আগেও নগরীর গুরুত্বপুর্নএলাকায় মশার ঔষধ দেয়া হয়েছে। তবে ড্রেনে দেয়া হয়নি। যে কারনে সাম্প্রতিক সময়ে মশার যন্ত্রনা একটু বেশি। তিনি আবারো বিসিসির দুর্বরতার কথা স্বিকার করে বলেন, ফান্ডে টাকা না থাকলে মশার ঔষধ কিনবো কিভাবে। আগামি বাজেটে এই সমস্য থাকবেনা বলেও জানান তিনি। তবে বর্তমান সময় নিয়ে তাদের এখন কোন ভাবনা নেই বলে জানান ওই কর্মকর্তা। বিসিসির একটি নির্ভর সুত্র জানায়, বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামাল ক্ষমতায় আমলে আর মশার ঔষধ ক্রয় করা হবেনা। অপর দিকে যে সকল কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা মশার ঔষধ দেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে তারাও এক বছর থাকবে বেকার। অর্থাৎ কাজ নেই কিন্তু বেতন আছে। নগরবাসী যতই মশার আক্রান্তে দুর্ভোগে থাকুক না কেন সেটা বিসিসির দেখার বিষয় নয়। নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র নিশ্চিত করেন, বিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা একাধিকবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মশার ঔষধ ক্রয় করার জন্য আবেদন করলেও তা নাকোচ করে দেয় তিনি ও মেয়র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, এক কোটি টাকার ঔষধ কিনলে মেয়র কিংবা প্রধান নির্বাহীর তেমন লাভ নেই কিন্তু বিসিসির ঠিকাদারি কাজের এক কোটি টাকার বিল ছাড়লে নগদ এক লাখ টাকা বড় বাবু, আর ছোট বাবুদের মিলে বিসিসিতে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো পারসেন্টিজ আসে। তাই মশা মেরে লাভ নাই।
Leave a Reply