নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভাটিখানা এলাকায় রাতের আঁধারে ৯৫ বছরের পুরনো একটি পুকুর ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। তা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ওই এলাকার মানুষের মাঝে। তারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভও করেছেন। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। স্থানীয় কাজীবাড়ি জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী সেলিম মৃধা জানান, ১৯২৫ সালে বিদালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় ওই পুকুর খনন করে মাটি দিয়ে বিদ্যালয়ের ভিটি উচু করা হয়। শের-ই বাংলার ফুফু আলতাফুন্নেছার বিশাল ভূসম্পত্তি ছিল ওই এলাকায়। তারাই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। কালক্রমে ক্রয় সূত্রে পুকুরটির মালিক হন নগরীর আলেকান্দা নিবাসী ফয়েজ আহমেদ। তার উত্তরাধিকাররা এখন পুকুরটির মালিক।
১০ বছর আগে পুকুরটি ক্রয়ের জন্য মসজিদ কমিটির সঙ্গে ফয়েজ আহমেদের চুক্তি হয়েছিল। তিনি আকস্মিক মৃত্যুবরণ করায় পুকুর ক্রয় করা হয়নি। তার পক্ষে আজহার মুন্সী (কয়েক মাস আগে মৃত্যুবরন করেন) নামে এক ব্যক্তি কয়েকযুগ ধরে মরহুম ফয়েজ আহম্মেদের সম্পত্তি দেখাশোনা করছিলো। পুকুরটির লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন আজাহার মুন্সির স্ত্রী বিলকিস বেগম। বুধবার পুকুর সেচ শুরু করে বৃহস্পতিবার দিনে মাছ ধরে নেয় বিলকিস বেগমের ছেলে মিন্টু মুন্সি। তারা ধরে নিয়েছিলেন মাছ ধরার জন্য পুকুর সেচ করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত অনুমানিক দেড়টার দিকে একের পর ট্রাক এসে পুকুরে বালু ফেলতে থাকে। বহিরাগত তরুন-যুবকরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বালু ফেলার কাজ তদারক করেন। শুক্রবার সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম বাদশা এলাকাবাসীর আন্দোলনে অংশ নিয়ে বলেন, সিটি করপোরেশণ নগরীর দেড় শ’ পুকুর সংরক্ষনের জন্য তালিকাভূক্ত করেছে। এর মধ্যে কাজীবাড়ি মসজিদ সংলগ্ন পুকুরটিও রয়েছে। রাতের আধারে অসৎ উদ্দেশ্যে বালু ফেলে পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা করা হচ্ছে। জমির কেয়ারটেকার মিন্টু মুন্সি বলেন, মৃত ফয়েজ আহমেদের উত্তারাধীকাররা (মেয়ে এবং ছেলে মৃত তারেক আহমেদের স্ত্রী) রাতে উপস্থিত থেকে পুকুর ভরাট শুরু করেন। সেখানে বহুতল ভবন করবেন তারা।
বরিশাল নদী-খাল-জলাশায় রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, নগরীর মধ্যে মালিক হলেই পুকুর ভরাট করা যাবে না। ওই এলাকায় অগ্নিদুর্ঘটনা হলে নিবার্পনে পানি সরবরাহের একমাত্র উৎস পুকুরটি। পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মো. আব্দুল হালিম বলেন, ভাটিখানা এলাকায় পুকুর ভরাটের খবর তিনি শুনেছেন। কাউকে পুকুর ভরাটের অনুমতি দেয়া হয়নি। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সরকারি, বেসরকারী কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর ভরাটের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন আছে। তারা পুকুর ভরাটের অনুমতি নেয়নি।
Leave a Reply