নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জে আবারো হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন। কোন কিছুতেই যেন থামছে না সর্বনাশা আড়িঁয়াল খা নদীর ভাঙ্গন। নদীবেষ্টীত বাবুগঞ্জ উপজেলার চারিদিকে শুধু ভাঙ্গনের শব্দ। গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩টি বসতবাড়ি, মসজিদ, রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় হঠাৎ করে উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের মীরগঞ্জ এলাকার দক্ষিণ পাশে খানকায়ে সুলতানিয়া নামক একটি মসজিদ, ৩ টি বসতঘর, বিদ্যুতের খুটি, মুল্যবান গাছ, বেশ কিছু জায়গাসহ একাংশ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। গত দুই সপ্তাহ পূর্বে একটি ইটের রাস্তা নদী ভাঙণে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এছাড়াও ভাঙণের ঝুকিতে রয়েছে আরো শতাধিক বাড়ীঘর। ইতি মধ্যে আশ-পাশের বাড়ী- ঘরের মালা-মালসহ ঘর সড়িয়ে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীদের সহায়তায়।
হঠাৎ করে নদী ভাঙণ দেখা দেয়ায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বরিশাল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মীরগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করেন। সরেজমিনে এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারীর চেয়ে নদীভাঙনের আতঙ্কে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভাঙন রোধে এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় লঞ্চঘাটের সড়কের সাথে রাজগুরু ও নতুন চর দুই গ্রামের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় অনেক দিন আগে। লঞ্চঘাটের সাথে সংযোগ সড়কের কালর্ভাট ভেঙে পড়ায় দুই গ্রামের লোকজন ১কিলোমিটার এলাকা ঘুরে লঞ্চঘাটে আসতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ১৫ দিন আগে কালভাটি ধসে পড়ে যায়। স্থানীয় আ’লীগ নেতা রসুল খান জানান, আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে লঞ্চঘাটে আসার কালভাট ধসে পড়েছে। কালভাটের দুই প্রান্তে ও মাঝে যে পিলার থাকে তা তীব্র স্রোতের কারনে তার নিচ থেকে মাঠি সরে গেছে। তাই ভার ধরে রাখতে পাড়েনি এটি। পাশেই সাঁকো তৈরী করে মানুষ চলাচল করে। স্থানীয় এলাকার ইউপি সদস্য জামাল হোসেন পুতুল জানান, আড়িঁয়াল খা নদীর ভাঙ্গনে উপজেলার মীরগঞ্জ এলাকার একটি মসজিদ, বসতবাড়ি ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে চলতি মৌসুমে ভাঙন তীব্র্র আকার ধারণ করবে। তখন অনেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, নদী থেকে আসা পানির স্রোতের কারনেই কালভাট ধসে পড়ে। এলাকাবাসীর দূর্ভোগ লাঘবে মানুষের চলাচলের জন্য নতুন করে বিকল্প অস্থায়ী সাকোঁর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী শুকনো মৌসুমে বাবুগঞ্জ লঞ্চঘাটের সাথে আঞ্চলিক সড়কে নতুন করে কালভাট ও রাস্তা নির্মান করা হবে।
Leave a Reply