মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন
যাত্রীবাহী লঞ্চে বসছে ক্যাসিনোসহ সকল জুয়ার আসর

যাত্রীবাহী লঞ্চে বসছে ক্যাসিনোসহ সকল জুয়ার আসর

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অভিজাত ক্লাবগুলো বন্ধ। তাই বলে কি জুয়া বন্ধ? মোটেও নয়। ক্যাসিনো জগতের বড় বড় জুয়াড়িরা ঠিকই খুঁজে পেয়েছেন বিকল্প আস্তানা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, ক্লাবপাড়ার জুয়া এখন জমে উঠেছে বিলাসবহুল লঞ্চে। রাজধানী ঢাকার সদরঘাট থেকে নিয়ম করে ছাড়ে ক্যাসিনো লঞ্চ। জুয়াড়িদের নিয়ে নৌবিহার শেষে ঘাটে ফিরে আসে গভীর রাতে। এছাড়া অনলাইনেও ঘরে বসে বিশ্বের নামিদামি ক্যাসিনোতে জুয়া খেলছেন জুয়াড়িরা। জুয়া হচ্ছে অভিজাত ফ্ল্যাটেও। রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বড় বড় ফ্ল্যাট রীতিমতো মিনি ক্যাসিনোতে পরিণত হয়েছে। বলা চলে ১ বছর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাই-ভোল্টেজ অভিযানে ক্যাসিনো সম্রাটসহ প্রথম সারির কয়েকজন ধরা পড়লেও বেশ আগেই তা থিতু হয়েছে। একটি সূত্র জানায়- সদরঘাটের ১৫ নম্বর জেটি থেকে ক্যাসিনো লঞ্চ ছেড়ে যায় সপ্তাহে ৪ দিন। লঞ্চেই খাবার-দাবারসহ নাচ-গানের জমজমাট আয়োজনসহ জুয়াড়িদের মনোরঞ্জনের সব আয়োজনই থাকে। জুয়ার সঙ্গে বিদেশি মদ পান করেন জুয়াড়িরা। এজন্য ঘাট থেকে আগেই লঞ্চে মজুদ রাখা হয় পর্যাপ্ত মদ-বিয়ার। সারা দিন জুয়া খেলে গভীর রাতে ক্যাসিনো লঞ্চগুলো ঘাটে ফিরে আসে।
পুরান ঢাকার এক জুয়াড়ি সাংবাদিকদের বলেন, লঞ্চের ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করছেন জনৈক যুবলীগ নেতা খোরশেদ। তার বাড়ি পুরান ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে মুক্তিযোদ্ধা ও আরামবাগ ক্লাবের ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জুয়াড়িদের সুবিধার জন্য জুয়া খেলার রুলেট মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বসানো হয়েছে লঞ্চে। প্রতি ট্রিপে ৫০ থেকে ৬০ জুয়াড়ি খেলায় অংশ নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে লঞ্চ ছাড়ার সময় বলা হয় সবাই পিকনিকে যাচ্ছেন।
তবে জুয়া খেলতে লঞ্চে উঠতে হলে আগে থেকেই বুকিং দিতে হয়। এজন্য বেশ কয়েকটি হটলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে ০১৯২২-৩৩২২০৩ নম্বরের হটলাইনে ফোন করে লঞ্চে জুয়া খেলার বুকিং দিতে চায় যুগান্তরের অনুসন্ধান সেল। হটলাইন নম্বর রিসিভকারী প্রথমেই পরিচয় জানতে চান। জিজ্ঞেস করেন নম্বর কোথা থেকে পেলেন। লঞ্চের খবর কে দিল ইত্যাদি। অপর প্রান্ত থেকে প্রথমেই কিছুটা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন যে প্রকৃত জুয়াড়ির সঙ্গে কথা বলছেন কিনা। কিছুটা সন্দেহ নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে বলেন- আমরা এখন লঞ্চে যাই না। এখন অন্যভাবে ব্যবস্থা করেছি। অন্য জায়গায় খেলা হচ্ছে। কোথায় খেলা হচ্ছে জানতে চাইলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অর্থাৎ তার কাছে মনে হয়েছে, তিনি অন্য কারও সঙ্গে কথা বলছেন। এ কারণে ফোন বন্ধ করে দেন।
অনুসন্ধান জানা যায়- বিভিন্ন ব্যাংকিং সংক্রান্ত ডকুমেন্ট থেকে জানা যায়, ঢাকায় অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন মোহাম্মদ হামিদ নামের এক ব্যক্তি। গুলশানের পিংক সিটি শপিং সেন্টার ও ধানম-ির এম্পায়ার প্লাজায় মোবাইল ফোন ব্যবসার আড়ালে তিনি অনলাইন জুয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তার অধীনে সাব-এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন আরও অনেকে। জুয়ার টাকা লেনদেনের অভিযোগে গোয়েন্দা সংস্থা দুটি ব্যাংক হিসাব নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। এর মধ্যে একটি হল সিটি ব্যাংকের কোনো একটি শাখায় ওপেন করা মা ইলেকট্রনিক্স ও ব্যাংক এশিয়ায় ওপেন করা সানি এন্টারপ্রাইজ নামের এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। সূত্র বলছে, ঢাকার ক্লাবগুলোতে এক সময় অন্তত ১৫ হাজার লোক ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এদের একটি বড় অংশ এখন ফের কোনো না কোনোভাবে জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। যেমন- দিলকুশা ক্লাবের ক্যাসিনোতে এক সময় ডিলার হিসেবে কাজ করতেন নীহারিকা নামের এক তরুণী। র‌্যাবের অভিযানে দিলকুশা বন্ধ হয়ে গেলে তিনি কিছুদিন ঢাকার বাইরে পালিয়ে ছিলেন। এখন তিনি জুয়ায় সক্রিয়। এছাড়া ঢাকার ক্যাসিনো জগতের পরিচিত নাম কথিত যুবলীগ নেতা তসলিম, কামাল, নান্টু, রিপন ওরফে দাড়িওয়ালা রিপন, মনির ওরফে আমেরিকান মনির জুয়ার অন্ধকার জগতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এদের মধ্যে যুবলীগ নেতা তসলিম ও কামালকে ঢাকার ক্যাসিনো জগতের অন্যতম হোতা বলে ধরা হয়। কারণ তাদের মাধ্যমেই ২০১৫ সালে ভিক্টোরিয়া ক্লাবে প্রথম জুয়ার প্রচলন হয়। এরপর ভিক্টোরিয়া থেকে ক্যাসিনো ছড়িয়ে পড়ে এ্যাজাক্স ক্লাবে। পরে কলাবাগানের কমিশনার সেন্টু কলাবাগান ক্লাবে ক্যাসিনো খোলেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মুখে পালিয়ে যাওয়া নেপালিরাও এখন ফের ঢাকার জুয়া জগতে সক্রিয়।
এদের মধ্যে দীনেশ ও রাজকুমার অন্যতম। দিলকুশা ক্লাবের ক্যাসিনোতে যুক্ত এ দুই নেপালি ঢাকায় ক্যাসিনো জগতের মাফিয়া বলে এক নামে পরিচিত ছিলেন। এছাড়া কৃষ্ণা এবং বাবা নামের সহোদর নেপালি ভিক্টোরিয়া ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন। এখন তারা অনলাইন ক্যাসিনো চালাচ্ছেন। একাধিক সূত্র বলছে, জুয়া খেলার জন্য সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। এর মধ্যে বিডি বেটস নামের ওয়েবসাইট চালাচ্ছেন জনৈক তাহের ওরফে মোটা তাহের, দেলোয়ার ও ফারুক। এরা সবাই আগে পল্টনের জামান টাওয়ারে ক্যাসিনো বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। র‌্যাবের অভিযানের সময় কিছুদিন পালিয়ে থাকার পর এখন ফের জুয়া জগতে পা রেখেছেন তারা। বিডি বেটস ওয়েবসাইটে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার জুয়া খেলা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাসিনোর রঙিন জালে আটকা পড়ে অনেক প্রতিষ্ঠিত ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী এখন নিঃস্ব। এদের মধ্যে আছেন গাজীপুরের গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আলম। ক্যাসিনোতে কয়েক কোটি টাকা খুইয়ে তিনি এখন সর্বস্বান্ত। তরিকুল নামের আরেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এক সময় ক্যাসিনো জগতে ভিআইপি খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনিও ক্যাসিনো জুয়ায় ব্যবসার পুঁজি পর্যন্ত খোয়ান। এ তালিকায় আছেন বায়িং হাউস ব্যবসায়ী মিজান, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী লিটন, টেক্সটাইল মেশিনারিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মাইকেল, উত্তরার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী জামিল, ইসমাইল, চেঙ্গিস ভাইসহ আরও অনেকে। জুয়ায় সবকিছু হারানোর পর অনেক ব্যবসায়ী লোকসান পোষাতে ব্যাংক ঋণ নিয়েও জুয়া খেলেন। অনেকে এখন ন্যূনতম লাভের আশায় অনলাইনে জুয়া খেলছেন। কিন্তু জুয়ায় খোয়ানো অর্থ ফিরিয়ে আনার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই।’ সুত্র: দৈনিক যুগান্তর

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com