স্ট্রোক হচ্ছে মস্তিষ্কের রোগ। এ রোগের কারণে রক্তনালিতে জটিলতা দেখা দেয়। ফলে হঠাৎ করে মস্তিষ্কের একাংশ কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। আমাদের দেশে স্ট্রোকের হার প্রতিহাজারে ৫ থেকে ১২ জন এবং স্ট্রোকের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ।
রোগের লক্ষণ : হঠাৎ শরীরের একাংশ অবশ বা দুর্বল হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা ও বমি, হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, কথা বলতে না পারা।
তাৎক্ষণিক করণীয় : কোনো রোগীর লক্ষণগুলো দেখা দিলে আতঙ্কিত না হয়ে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বা নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া উচিত। মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান করে স্ট্রোকের ধরন নির্ণয় করা হয়। এটি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার জন্য অথবা রক্তক্ষরণের জন্য হতে পারে। চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন। তাই নিশ্চিত রোগ নির্ণয় জরুরি।
জরুরি চিকিৎসা : অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে- শ্বাসনালি, শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিয়মিত রাখার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। রোগীকে একদিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। চোখ ও মুখের যত্ন নিতে হবে। প্রস্রাব আটকে গেলে বা প্রস্রাব ঝরলে প্রয়োজনে ক্যাথেটার দিতে হবে। পুষ্টি ও খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে নাকে নল দিতে হতে পারে।
স্ট্রোকে আক্রান্ত সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, খিঁচুনি, অচেতন রোগী অথবা অন্য সমস্যা, যেমন- অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি থাকলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুঝুঁকি কমানো, কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরে যেন স্ট্রোক না হয় তার ব্যবস্থা করা। সময়মতো চিকিৎসা পেলে ৩০ শতাংশ রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।
প্রতিরোধের উপায় : স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য চাই সচেতনতা। রক্তের চর্বি, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান বর্জন, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন ঠিক রাখা, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি, সতেজ ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে আপনি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
Leave a Reply