রাজধানী ঢাকার প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যার প্রতি দশজনে একজন ইতোমধ্যেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়া করোনা মহামারী চটজলদি চলে যাচ্ছে এমনটা ভাববারও কোনো কারণ নেই। গত বৃহস্পতিবার ‘বিটেন অর ব্রোকেন? ইনফরমালিটি অ্যান্ড কোভিড-১৯ ইন সাউথ এশিয়া’ শিরোনামের বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই চিত্র ফুটে উঠেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংক্রমণের যে তথ্য সরকারিভাবে দেওয়া হয় বাস্তবের সঙ্গে এর গরমিল রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড পরিস্থিতি যেখানে পৌঁছেছে, তাতে প্রচুর অনিশ্চয়তা রয়েছে। আসন্ন শীত মৌসুমে বাংলাদেশে করোনা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হেেত পারে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তা মার্সি টেম্বন টিকাপ্রাপ্তির ব্যাপারে সংস্থার তরফ থেকে উভয় দেশকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এর জন্য অবশ্যই বাংলাদেশকে একটি কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে এক ধরনের হতাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় পরীক্ষার সংখ্যা খুবই নগণ্য। যে কারণে প্রকৃত অবস্থা অজানাই থেকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে এতে কী প্রভাব পড়বে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এর আগে গত আগস্ট মাসে একটি আন্তর্জাতিক মানের জরিপে একই ধরনের তথ্য বেরিয়ে এসেছিল। বলা হয়েছিল, ঢাকায় সে সময় অন্তত ১৮ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। জরিপটি পরিচালনা করেছিল সরকারি সংস্থা আইইডিসিআর। সহযোগিতা করেছিল আইসিডিডিআর’বি।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠাদের মধ্যে দীর্ঘসময়ের জন্য প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে এমন প্রমাণ নেই। সুতরাং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় ভবিষ্যতে মহামারী আরও বিস্তৃত হতে পারে। তাই এই মহামারী খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
বিশ্বব্যাংক এমন এক সময়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করল, যখন করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যায় বাংলাদেশ এশিয়ায় চতুর্থ ও বিশ্বে ১৬তম অবস্থানে আছে। গতকাল শুক্রবারও দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭৮ জন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭০ জন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ হাজার ৪৭৭।
Leave a Reply