সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
ঋণ বাড়িয়ে ঋণ কমাচ্ছে সরকার

ঋণ বাড়িয়ে ঋণ কমাচ্ছে সরকার

চলতি বছরের ১২ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। আর গত ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। স্বাভাবিক হিসেবে গত দেড় মাসে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে তারচেয়ে বেশি পরিশোধ করছে। কিন্তু সরকার ঋণ পরিশোধ করছে ঠিকই তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। আলোচ্য সময়ে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৩ হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ২৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা ঋণ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক ঋণ (কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক মিলে) দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। গত বছরের শেষ দিন ৩০ জুন যা ছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের নিট ঋণ ছিল ৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। হিসাব মতে দেড় মাসের ব্যবধানে সরকারের নিট ঋণ ৫ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা কমেছে। নিট ঋণ কমেছে এটি ঠিক, তবে সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুন শেষে যা ছিল ৪৪ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৩ হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে।

অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। আলোচ্য তিন মাসে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বেড়েছে ২৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। ১২ আগস্ট পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর

কাছ থেকে নিট ১০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার। দেড় মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ গ্রহণ আড়াইগুণেরও বেশি বাড়িয়েছে। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করে সরকার। আলোচ্য দেড় মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া ঋণ পরিশোধ ৯ গুণ বাড়িয়েছে। অর্থাৎ সরকারের নিট ঋণ কমলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে দায় বেড়েছে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সরকার যদি বেশি ঋণ নেয় তা হলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ কমতে পারে। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে বেশি ঋণ নিলে বাজারে ‘ফ্রেশ টাকা’র সরবরাহ বাড়ে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এখন মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির একটি প্রবণতা রয়েছে। এই বিবেচনায় সরকার হয়তো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে পরিশোধ করছে বেশি। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক আরও বলেন, সরকার যেভাবে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল করোনার কারণে সেই হারে নিতে হচ্ছে না। ফলে সামগ্রিকভাবে নিট ঋণ অনেক কম। করোনার কারণে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন ঠিকমতো হচ্ছে না, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের হার অনেক কম। তবে সরকারকে খরচ বাড়াতে হবে। কারণ সরকারের প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হলে করোনাপরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে পারে।

এদিকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর এবং করোনার প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা হওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। ফলে গত আগস্টে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো স্বল্পসুদের সরকারি বিল-বন্ড কিনছে। এতে সুদ আয় কিছুটা কমলেও অর্থ আদায় নিশ্চিত হতে পারছে ব্যাংকগুলো। কেননা করোনার কারণে অধিকাংশ গ্রাহক ঋণের কিস্তি ফেরত দিতে পারছে না। এতে ব্যাংকগুলোর অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ ছিল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো গ্রাহক অর্থ ফেরত না দিলেও তাকে খেলাপি করা যাবে না। এতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি না বাড়লেও ব্যাংকগুলোর নগদ আদায় কমে যায়। আগামীতে মন্দার কারণে খেলাপি ঋণ বাড়বে, অন্যদিকে ব্যাংকগুলোর সুদ আয় কমে যাবে। আবার সব ঋণের ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর করায় এসএমইসহ বিভিন্ন ব্যয়বহুল খাতে ঋণ দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এসএমই ঋণের পরিবর্তে সরকারকে ঋণ দেওয়া ব্যাংকগুলোর জন্য লাভজনক। কারণ সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোর তহবিল ব্যয় সর্বনিম্ন।

বিপুল ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেও নিট ঋণ কমে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। এই সময়ে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ পরিশোধের চাপ কম থাকে। আবার করোনা সংকটের কারণে অনেক কাজ বন্ধ থাকায় সেখানে অর্থ ব্যয় কম হচ্ছে। এর মধ্যে বিদেশি ঋণও পেয়েছে সরকার। আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে আয়ও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট আয় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের এ দুই মাসে যা ছিল ৩ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আদায়ও সামান্য বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৩০ হাজার ১১২ কোটি টাকা।

সরকারের ঋণগ্রহণ-সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতিপূরণে ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত অর্থবছর বাজেটে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৭২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার। মূলত রাজস্ব আদায়ে বড় অঙ্কের ঘাটতি এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যাংকঋণ বাড়াতে বাধ্য হয় সরকার।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com