নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটে কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বরসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নির্যাতিতা কিশোরী গৃহবধূ বাদী হয়ে কাজিরহাট থানায় মামলাটি করে। রাত একটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসীম কুমার সিকদার। এর আগে স্থানীয় আন্ধারমানিক ইউনিয়নের বাসিন্দা ওই গৃহবধূকে রোববার গভীর রাতে বাসা থেকে পড়শি রাজিব ফকির নামে এক যুবক বন্ধু বাবু বেপারীর বাসায় ডেকে নেয়। সেখানে এই দুই বন্ধুসহ নাজমুল হোসেন নামের আরও একজন মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই রাতে স্থানীয় এক ওয়ার্ড মেম্বর বিষয়টি আপসরফার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হলে লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরী গৃববধূ সোমবার সকালে নিজগৃহে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এই খবর জানাজানি হলে সন্ধ্যা নাগাদ পুলিশ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- কিশোরীর তিন মাস পূর্বে এক যুবকের সাথে বিবাহ হলেও তিনি আন্ধারমানিক ইউনিয়নে বাবার বাসায় অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় হালান আকনের ছেলে নাজমুল হোসেন, দুলাল বেপারীর ছেলে বাবু বেপারী এবং হাসান ফকিরের ছেলে রাজিব ফকির তাকে তাকে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এমনকি বিয়ে পরেও একইভাবে হয়রানি করে।
কিশোরীর দুলা ভাই আবু বক্কর জানান, রোববার রাত একটার দিকে তার শ্যালিকাকে পড়শি দুলাল বেপারীর ছেলে বাবু ডেকে নেয়। সেখানে তাকে আটকে বাবুসহ রাজিব ও নাজমুল পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এই বিষয়টি স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর শাহ পরান ভুইয়া জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত হন এবং অর্থের বিনিময়ে আপসরফার চেষ্টা চালান। সেখানে সমঝোতায় যেতে নারাজ থাকার বিষয়টি জানিয়ে গৃহবধূকে নিয়ে স্বজনেরা চলে আসে। এই বিষয়টি এলাকায় কমবেশি জানাজানি হলে কিশোরী নববধূ সোমবার সকালে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে উদ্ধার করে স্বজনেরা তাকে পার্শ্ববর্তী হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় দুদিন বাদে মঙ্গলবার রাতে মেম্বরসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করে কিশোরী। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কাজিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার সিকদার জানান, ধর্ষণ একটি আপসরফা অযোগ্য মামলা। কিন্তু স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর এটি সমঝোতার চেষ্টা চালিয়েছেন। এই কারণে তাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। এখন তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।’
Leave a Reply