করোনা মহামারির প্রভাবে নির্ধারিত সময়ের চার সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই ভোট চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। যদিও এরই মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ আগেভাগেই তথা গত ৩ অক্টোবর ভোট প্রয়োগ করেছেন।
নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড, বিবিসিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচন সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তা এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়।
এবার সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে ভোট দিচ্ছেন লাখ লাখ ভোটার। ভোট দেওয়ার পাশাপাশি দুটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গণভোটও দিচ্ছেন নিউজিল্যান্ডবাসী। এবারও জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি।
এদিকে, নির্বাচনের আগে মতামত জরিপে দেখা গেছে, ফের জিততে যাচ্ছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের দল লেবার পার্টির বিপরীতে লড়ছে জুডিথ কলিন্সের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পার্টি। জরিপে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনে জেসিন্ডার দলের জোট গড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ক্রাইস্টচার্চ হামলাসহ বিভিন্ন সংকটে নেতৃত্বের জন্য বিশ্বজুড়েই আলোচিত নাম জেসিন্ডা আরডার্ন। করোনা নিয়ন্ত্রণে সাফল্য নির্বাচনী মাঠে বহুগুণ এগিয়ে দিয়েছে তাকে। সবগুলো জরিপেই একচ্ছত্র শ্রেষ্ঠত্ব ৪০ বছর বয়সী কিউই প্রধানমন্ত্রীর। ২য় মেয়াদে তার নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও। প্রচারণার শেষ মুহূর্তেও তাই দেখা গেছে আত্মবিশ্বাসী আরডার্নকে।
ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘আমরা চাই ভোটাধিকার প্রয়োগের চর্চা করুক ব্যস্ত নাগরিকরা। আমাদের লক্ষ্য দলের জন্য প্রতিটি ভোট নিশ্চিত করা। শক্তিশালী, স্থিতিশীল সরকার গঠনে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার।’
এক জরিপে দেখা গেছে, অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আছে লেবার পার্টি। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে রক্ষণশীল ন্যাশনাল পার্টি।
অবশ্য জরিপের ফলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রক্ষণশীল ন্যাশনাল পার্টি প্রধান জুডিথ কলিন্স। তার দাবি, আগে বহুবারই ভুল প্রমাণিত হয়েছে জরিপ। জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী জুডিথ মনে করিয়ে দেন বর্তমান সরকারের অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা আর আবাসন খাতে ব্যর্থতার কথা।
জুডিথ কলিন্স বলেন, ‘আমি মনে করি না আমি হারব। কারণ এমন দলের ওপর আস্থা রাখা কঠিন, যারা কথা দিয়ে কথা রাখে না। তারা নতুন নতুন বহু অঙ্গীকার করেছে অথচ আগের প্রতিশ্রুতি পালনেই ব্যর্থ।’
এবারের নির্বাচনে রেকর্ড ১৭ লাখের বেশি আগাম ভোট পড়েছে। ৫৩তম পার্লামেন্টে জেসিন্ডা আরডার্নের দল লেবার পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন কি না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। সে ক্ষেত্রে ১২০ আসনের পার্লামেন্টে ৬১ আসনে জিততে হবে ক্ষমতাসীনদের।
Leave a Reply