পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সন্দেহভাজন আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে রাখতে না পারার ব্যর্থতার সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল সোমবার সংস্থাটির জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক পরিচালক ড. মাইকেল রায়ান এ তথ্য জানান। তিনি বলেছেন, সামর্থ্য থাকলে প্রতিটি নিশ্চিত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সকলকে সঠিক মেয়াদে কোয়ারেন্টিনে রাখতেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের মহামারির শুরু থেকে এর বিস্তার রোধে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন পর্যন্ত আলাদা রাখা বা কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে ডব্লিউএইচও। ভাইরাসটির কার্যকর ও স্বীকৃত কোন প্রতিষেধক এখনো পাওয়া না যাওয়ায় সংক্রমণ ঠেকাতে এই প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়ে আসছে সংস্থাটি। তারপরও গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে।
ডব্লিউএইচও’র এই কর্মকর্তা জানান, গত এক সপ্তাহে ইউরোপীয় অঞ্চলে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার ৪৮টি সদস্য দেশের মধ্যে অর্ধেকের বেশি দেশে আক্রান্ত বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর এই বৃদ্ধির সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর হার শনাক্ত করার কাজও শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
‘কিছুটা স্বস্তির খবর হলো যারা বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই অল্প বয়সী। এ ছাড়া চিকিৎসা পদ্ধতিরও উন্নতি হয়েছে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহারের কারণে আক্রান্তদের শরীরে ভাইরাসের পরিমাণও কম থাকছে’, যোগ করেন ড. মাইকেল রায়ান।
ডব্লিউএইচও বলছে, বর্তমানে ৪২টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি তৃতীয় বা চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে। এ ছাড়া আরও ১৫৬টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণাগারে পরীক্ষা চলছে যেগুলো মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হবে।
তবে ডব্লিউএইচও’র মুখ্য বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথান জানান, এই বছরের শেষ নাগাদ হয়তো এক বা দুটি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে। আর বাকি বেশির ভাগই আগামী বছরের শুরু থেকে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করতে পারে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ লাখ ২২ হাজার ৯৮৪ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ কোটি ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯১৮ জন। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়।
Leave a Reply