কক্সবাজারের চকরিয়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে চার বছরের মেয়ে ও কিশোর ছেলেসহ তাদের মাকে তিন দিন ধরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারীর অভিযোগ, তাকে গাছের বাটাম দিয়ে ও বৈদ্যুতিক তার দিয়ে তার সারা শরীর থেঁতলিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া হাত-পা বেঁধে গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দেওয়া হয়েছে। চকরিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রবিবার রাত ১১টার দিকে মা-ছেলে ও শিশুকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর আহতদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে উদ্ধারের পর চুরির মামলায় আসামি হওয়ায় তাদের আদালতে নেওয়া হলে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। নির্যাতিতরা হলেন চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কোচপাড়ার মৃত মো. রফিকের স্ত্রী রশিদা বেগম (৩২), তার ছেলে মো. রিপন (১৬) ও মেয়ে রাজিয়া বেগম (৪)।
নির্যাতিত রশিদা বেগম বলেন, আমার ছেলে রিপন চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল এলাকায় আমড়া বিক্রি করে সংসার চালায়। টার্মিনাল এলাকায় দেড় মাস আগে আয়ুব আলীর মালিকানাধীন একটি কুলিং কর্নার চুরি হয়। গত শুক্রবার সকালে উখিয়ায় খালার বাড়িতে বেড়াতে যায় রিপন। আয়ুব আলীসহ পাঁচজন লোক ওইদিন বিকালে রিপনকে চুরির অপবাদ দিয়ে হাত বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চকরিয়ার পালাকাটায় নিয়ে যায়। সেখানে আয়ুব আলীর বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রেখে ছেলেকে বেধড়ক মারধর করে। পরে মোবাইলে খবর দিলে আমি ও আমার চার বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে আমাদেরও আটকে রাখা হয়। তিন দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ১০-১২ জন নারী-পুরুষ আমাদের ব্যাপক মারধর করে। গাছের বাটাম দিয়ে ও বৈদ্যুতিক তার দিয়ে আমার সারা শরীর থেঁতলিয়ে দেওয়া হয়। হাত-পা বেঁধে আমার যৌনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া ঢুকিয়ে দেয়। নির্যাতনের সময় চার বছরের মেয়েকে আমার কাছ থেকে একদিন আলাদা করে রাখে তারা। ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয়নি। আমাদের নির্যাতনের ছবি মোবাইলে ধারণ করে চুরির বিষয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করে। পরে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে দস্তখতও নেয়া হয়।
অন্যদিকে সোমবার দুপুরে মো. হারুনর রশীদ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মা ও ছেলেকে আসামি করে থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেন। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, মা-ছেলেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। মা-ছেলের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের আটকে রেখে মারধরের বিষয়েও একটি মামলা হয়েছে। মা-ছেলেকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
Leave a Reply