রাজধানীর চকবাজার দেবিদাস ঘাট লেনে অবস্থিত হাজী সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ এরফান সেলিমের বাসভবন থেকে পিস্তল-শর্টগান, ইয়াবা ও বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)। আজ সোমবার দুপুর থেকে পরিচালিত এ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় এরফানকেও। পরে এক প্রেস ব্রিফিং থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ দুপুরে গণমাধ্যমে জানান, সোয়ারি ঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের একটি বাড়ি আছে, সেটা ঘেরাও করে র্যাব সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে। পরে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বলেন, ‘আমাদের টিমের সদস্যরা হাজী সেলিমের ছেলেকে হেফাজতে নিয়েছে।’
অভিযান থেকে যা পাওয়া গেল:
এরফানের বাসায় চালানো অভিযানে একটি কন্ট্রোল রুমের সন্ধান পেয়েছে র্যাব-১০। এই কক্ষ থেকে তিনি তার নিজের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এই কক্ষ থেকে ৩৫ টি লাইসেন্সবিহীন ওয়াকিটকি, দূরবীন, একটি পিস্তল ও শর্টগান উদ্ধার করেছে সংস্থাটি।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খানের দায়ের করা মামলায় এরফানকে গ্রেপ্তারে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এর আগে একই মামলায় হাজী সেলিমের গাড়ি চালক মীজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) রবিউল ইসলাম আজ দুপুরে গাড়িচালককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি কলাবাগান সিগন্যালের পাশে হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খানকে মারধর করা হয়। তার দাঁত ভেঙে ফেলা হয়। এ ঘটনায় একটি জিডি করেন ওয়াসিফ।
জিডিও ওয়াসিফ উল্লেখ করেন, তিনি ও তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা সামলে সড়কের পাশে মোটরসাইকেল থেকে নেমে গাড়িটির সামনে দাঁড়ান ওয়াসিম। তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে গাড়ি থেকে জাহিদ ও আবু বক্কর সিদ্দিকসহ আরও ২-৩ জন তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। তাকে ও তার স্ত্রীকে হত্যার হুমকিসহ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা। ঘটনার পর পর গাড়িটি ফেলে এর নম্বর প্লেট ভেঙে চলে যান হাজী সেলিমের ছেলে ও তার বডিগার্ডরা। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, মারধর করা ব্যক্তি হাজী সেলিমের ছেলে ও তার বডিগার্ড।
পরবর্তীতে আজ সকাল আটটার দিকে মামলা করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় আসামি করা হয় এরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, গাড়িচালক মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই থেকে তিনজনকে। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে হাজি সেলিমের গাড়ির ড্রাইভার মীজানুর গ্রেপ্তার হন। পরে দুপুরে নিজ বাসবভন থেকে এরফানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
Leave a Reply