সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নাগরিকেরা কাফালা বা স্পন্সরশিপের মাধ্যমে অভিবাসীদের কাজের ভিসা ও অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিতে পারে। এই সুযোগে ভিসাদাতা কফিলরা নিজেদের স্বার্থে প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর নানা শোষণ চালান। তাই সৌদি আরবে এই কাফালা প্রথা শিগগিরই বাতিল হতে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবের মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছে। শ্রম এবং মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী সপ্তাহে কাফালা ও কফিল প্রথা বাতিলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসের মধ্যেই এ ঘোষণা কার্যকর করা হবে।
এর আগে, ২০১৮ সালের ১৪ মে এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিসভায় একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটি কার্যকর হলে দেশটিতে বসবাসরত প্রায় ১০ মিলিয়নের বেশি প্রবাসী সুফল ভোগ করবে।
কাফালা বা কফিল প্রথা বাতিল হলে প্রবাসীরা সরাসরি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যাবেন। শ্রম মন্ত্রণালয়ই হবে প্রবাসীদের অভিভাবক। ফলে প্রবাসীর অর্থ লোপাট এবং অবৈধ হবার সম্ভাবনা নেমে আসবে প্রায় শূন্যের কোঠায়।
কাফালা প্রথা হচ্ছে সৌদির কোনো নাগরিকের অধীনে থেকে তার নামে কাজ করা, ব্যবসা করা। এর বিনিময়ে ওই সৌদি নাগরিক মাসে মাসে একটা লভ্যাংশ নেয় প্রবাসীর কাছ থেকে।
কাফালা প্রথাতে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় প্রবাসীদের। প্রবাসীরা নানা নির্যাতনের শিকার হন। এ প্রথায় সৌদি আরবে লাখো বাংলাদেশি অনিশ্চিত জীবনে আটকে আছেন।
কাফালা প্রথার কারণে কফিল বা নিয়োগকর্তা প্রবাসীদের ওপর নানাভাবে শোষণ চালান। এসব অত্যাচার-নির্যাতনের কোনো সুবিচার মেলে না। সবকিছু মুখ নিরবে সহ্য করতে হয়। সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় পড়েন গৃহস্থালি কাজে নিযুক্ত অভিবাসীরা।
প্রবাসীরা ভয়ে থাকেন কখন না জানি কফিল অন্যায় আবদার করে মোটা অংকের টাকা চেয়ে নেয় । অথবা তাকে বঞ্চিত করে নিজেই ব্যবসার দখল নিয়ে নেয়। যেহেতু দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কফিলের নামে, সেহেতু এরকম ঘটনায় আইনের সহায়তাও খুব বেশি পাওয়ার সুযোগ থাকে না ।
কাফালা প্রথা বিলুপ্তির পর ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নিজেদের কাগজপত্র নিজেরাই করে নিতে পারবেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারানোর ভয়ও আর থাকবে না।
আকামা নবায়ন, স্বাধীনভাবে এক্সিট-রিএন্ট্রি ভিসা গ্রহণ, ইত্যাদি অনেক কাজই প্রবাসীরা কফিলের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই করতে পারবেন।
Leave a Reply