ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের উপজাতি অধ্যুষিত একটি এলাকার জঙ্গল থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের শিরচ্ছেদ করা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কালো জাদুবিদ্যা চর্চার অভিযোগে পরিবারটিকে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। এরপর তাদেরকে শিরচ্ছেদ করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, ঝাড়খন্ডের খুন্তি জেলার কুদা গ্রাম থেকে গত ৭ অক্টোবর নিখোঁজ হন বিরষা মুণ্ডা (৪৮), তার স্ত্রী সুক্রু পুর্তি (৪৩) ও মেয়ে সোমওয়ার পুর্তি (২০)। গত ১২ অক্টোবর পরিবারটির বিবাহিত মেয়ে তেলানি বাবা-মা এবং ছোট বোনকে খুঁজে না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন। স্থানীয় সাইকো থানায় অভিযোগে দায়েরের পরই ঘটনাটি সামনে আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তেলানি জানান, তিনি গত ৮ অক্টোবর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বাবার বাড়িতে এসে দরজা বন্ধ দেখে তিনি ভাবেন কেউ হয়তো বাড়িতে নেই। পরে সব প্রতিবেশীর কাছে তার বাবা, মা, বোনের খোঁজ নিলেও তারা কিছু জানাতে পারেনি। সম্ভাব্য সব জায়গাতে খোঁজার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে কয়েকজন গ্রামবাসী তার বাবা, মা ও বোনকে অপহরণ করে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই তিনজনের খোঁজে ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করে তল্লাশি শুরু হয়। তবুও কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে তেলানির অভিযোগে উল্লেখ থাকা নয় গ্রামবাসীর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খুন্তি জেলার পুলিশ সুপার আশুতোষ শেখর বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের বাড়ির কাছের জঙ্গলে রাবা নদীর কাছের একটি গর্ত থেকে ওই তিনজনের শিরচ্ছেদ করা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ২৩ দিন আগে কালো জাদুবিদ্যা চর্চার অভিযোগে কয়েক গ্রামবাসী তাদের অপহরণ করে বলে শোনা যাচ্ছে। আমরা একই গ্রামের সোমা মুন্ডা, রাঘু মুন্ডা এবং বিশরা মুন্ডা নামে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা এই অপরাধে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক হাতুড়ে ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
চলতি মাসের শুরুতে ওই গ্রামে এক নবজাতকের জন্ম হয়।নবজাতকটি জন্মের কয়েক দিনের মাথায় মারা যায়। স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার নবজাতকটির পরিবারকে জানায়, বিরষা মুন্ডার পরিবারের করা কালো জাদুবিদ্যার চর্চার কারণেই নবজাতকটির মৃত্যু হয়ে। এই ঘটনার পর থেকেই বিরষা মুন্ডার পরিবারের তিন সদস্য নিখোঁজ হয়ে যায়।
Leave a Reply