চীনের উহানে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি দেশটিতে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় । তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি। চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে, ২ ফেব্রুয়ারি। প্রায় ১০ মাসে বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ১২ লাখ ছাড়াল।
পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার শুরু থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনাবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য দিয়ে আসছে। তাদের সবশেষ তথ্য বলছে, বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছে ১২ লাখ ৫ হাজার ১৯৪ জন। বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ কোটি ৬৮ লাখ ৯ হাজার ২৫২। বিশ্বে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৩৭৪।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯১১। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ জন।
ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮২ লাখ ২৯ হাজার ৩২২। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৬৪২ জন।
ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। ব্রাজিলে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৫। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ১০৪ জন। তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। ফ্রান্স পঞ্চম। স্পেন ষষ্ঠ। আর্জেন্টিনা সপ্তম। কলম্বিয়া অষ্টম। যুক্তরাজ্য নবম। মেক্সিকো দশম।
তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল রোববারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৪ লাখ ৯ হাজার ২৫২ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মোট ৫ হাজার ৯৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৪০ জন।
মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় দেশে করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর সুস্থ হওয়ার হার ৭৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে চলতি বছরের ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানানো হয় ১৮ মার্চ।
সরকার আশঙ্কা করছে, আসছে শীতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিতে পারে। জনস্বাস্থ্যবিদেরাও বলছেন, কয়েক দিন ধরে রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে আরও সপ্তাহ দুয়েক পরিস্থিতি দেখতে হবে। এ সময় যদি শনাক্তের হার বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে দ্বিতীয় ঢেউ আসছে বা আবার সংক্রমণ বাড়ছে বলে ধরে নিতে হবে।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, টিকা আসার আগপর্যন্ত নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের মূল উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। মাস্ক পরা, কিছু সময় পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে। করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ১১ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটি করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯’। আর ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
Leave a Reply