সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেনের বিজয় মেনে নিতে অস্বীকার করে আসা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। নির্বাচনে জালিয়াতির ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে মামলা করেছেন তিনি। ট্রাম্পের দাবি, তিনিই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তবে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকবেন কিনা তা সময়ই বলে দেবে। দ্য গার্ডিয়ান।
নির্বাচন শেষ হওয়ার পর দীর্ঘ সময় ক্যামেরার সামনে কথা বলা থেকে বিরত থাকেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে সেই নীরবতা ভাঙেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। করোনা ভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আবারও লকডাউন শুরু করবেন না জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আশা করছি ভবিষ্যতে যে কোনো কিছু ঘটতে পারে। কোন প্রশাসন দায়িত্ব নেবে, তা কেউ বলতে পারে না। আমার ধারণা, এ জন্য সময় লাগবে।’ ট্রাম্পের এই ইঙ্গিতকে পরাজয় মেনে নেওয়ার আভাস বলে মনে করছেন অনেকেই।
তবে শুক্রবারও টুইট বার্তায় নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে তার দাবিকে সমর্থন জানানোয় সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ট্রাম্প। আগামী শনিবার ওয়াশিংটনের পরিকল্পিত র্যালিতে তাকে থামানো হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি। সরকার গঠনে ৫৩৮টি ভোটের মধ্যে ন্যূনতম ২৭০ ভোট পেতে হয়।
নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে ট্রাম্প যে অভিযোগ আনছেন, সেগুলোকে হাস্যকর আখ্যা দিয়েছেন তারই নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের এক ঊর্ধ্বতন নির্বাচনী কর্মকর্তা। নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এক সাক্ষাৎকারে বেন হোভল্যান্ড নামে ওই কর্মকর্তা বলেন, চারপাশে যেসব ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ঘুরছে তার পরিণতি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ইলেকশন অ্যাসিস্ট্যান্স কমিশন পরিচালনা করেন বেন হোভল্যান্ড। অন্য কাজের পাশাপাশি ভোটিং মেশিন পরীক্ষা এবং অনুমোদন করা এই কমিশনের দায়িত্ব। গত বছর এই কমিশনে হোভল্যান্ডকে মনোনীত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সিনেট সর্বসম্মতক্রমে তা অনুমোদন করে। নির্বাচন তদারক করা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে থাকেন হোভল্যান্ড।
শুক্রবারের ওই সাক্ষাৎকারে বেন হোভল্যান্ড বলেন, ‘সর্বনিম্ন (পরিণতি) হলো এটা আমাদের নির্বাচন পরিচালনা করা পেশাজীবীদের জন্য অপমানজনক আর ধারণা করছি, সেটাই এর সবচেয়ে মারাত্মক ফল।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকজন তাদের কাজ করছেন, কিন্তু এখন তা করতে তারা নিরাপদ বোধ করছেন না। সেটা একটা বিপর্যয়, আশঙ্কাজনক। তারা সবাই জনগণের সেবক। এই কাজগুলো তারা সম্মান পেতে কিংবা ধনী হওয়ার জন্য করেন না।’
ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের আনা অভিযোগগুলো আইনি প্রক্রিয়া থেকে খুবই আলাদা বলেও মনে করেন হোভল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘আমরা টুইটার কিংবা বক্তৃতার মঞ্চে বলিষ্ঠ বক্তব্য দেখতে পাচ্ছি আর জনশ্রুতি এবং হাস্যকর প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে দেখছি। এগুলোর পরস্পরের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।’
Leave a Reply