ডায়াবেটিস এক ধরনের বিপাকজনিত রোগ। এই রোগে সাধারণত রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে রোগীকে কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে চলতে হয়- যেমন নিয়মিত খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম ও ওষুধ গ্রহণ। তবে সেই সঙ্গে তাকে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরও যথেষ্ট যত্ন নিতে হয়, নতুবা দেখা দেয় নানা ধরনের জটিলতা।
এই জটিলতাগুলোর মধ্যে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, চোখের সমস্যা, নার্ভের সমস্যা পচনশীল রোগসহ মুখের ভেতরের মাড়ির রোগের জটিলতা। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের মুখের যত্নের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে তাদের ওষুধপত্র ব্যবহারেও সচেতন থাকা দরকার। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীদের মাড়ির রোগ একটি প্রধান সমস্যা, তাই তাদের ছয় মাস পর পর দাঁত মুখ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। মাড়ির শল্যচিকিৎসা, দাঁত তুলে ফেলা ইত্যাদি কাজের আগে অবশ্যই যেসব ব্যাপারে সচেতনতা একান্ত প্রয়োজন তা হলো-
ডেন্টাল সার্জারি, যেমন- দাঁত তুলে ফেলানোর ক্ষেত্রে আগে রক্তের শর্করার পরিমাণ মেপে দেখা। যেমন- অভুক্ত অবস্থায় ৬ মি. মোল ও নাস্তার দুঘণ্টার পর ৮-৯ মি. মোল থাকাই বাঞ্ছনীয়। তবে নাস্তার দুঘণ্টার পর ৮-৯ মি. মোল থাকলেও এ ধরনের ডেন্টাল সার্জারি করা যায় সতর্কতার সঙ্গে। যেমন- ওষুধ ইনসুলিন বা ট্যাবলেট নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়া (ডাক্তারের পরামর্শে)। কিন্তু যদি নাস্তার দুঘণ্টা পর রক্তের সুগার ১০-১২ মি. মোলের মতো বা বেশি থাকে, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ইনসুলিনের মাত্রা বা ট্যাবলেটের পরিমাণ বাড়িয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
দাঁতের যে কোনো চিকিৎসায়, যেমন- মাড়ির রোগের সার্জারি ও অন্যান্য অপারেশন বা দাঁত তোলার ক্ষেত্রে অন্তত দুদিন আগে রোগীর ইতিহাস জেনে কার্যকর গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক এবং তা অপারেশনের সময় থেকে সাতদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। তবে ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই জানা প্রয়োজন তার কিডনি সংক্রান্ত কোনো জটিলতা আছে কিনা। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীর হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে, সেহেতু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ সেবন করা ভালো।
Leave a Reply