শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
ছাত্রলীগ নেতার পরকীয়ায় তছনছ প্রবাসীর ১৭ বছরের সংসার

ছাত্রলীগ নেতার পরকীয়ায় তছনছ প্রবাসীর ১৭ বছরের সংসার

মুলাদী প্রতিবেদক ॥ বরিশালের মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেনের পরকিয়ায় তছনছ হয়ে গেছে ১৭ বছরের প্রবাসীর সংসার। এক যুগ ধরে বিদেশে অবস্থান করলেও উপার্জিত অর্থ পরকিয়া প্রেমিককে সাথে নিয়ে দুই সন্তানের জননী আছমা আক্তার লাকী আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাকী ও মুরাদ বিয়ে করায় অসহায় হয়ে পড়েছে ওই সংসারের ১০ ও ৫ বছরের দুই সন্তান। পরকিয়ায় প্রবাসীর সংসার ভাঙ্গার পরও অভিযুক্ত কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে এখনো নেয়া হয়নি সাংগঠনিক ব্যবস্থা। আর অব্যাহত হুমকিতে মায়ের অবর্তমানে সন্তানদের শান্তনা দিতে দেশেও আসতে পারছেন না প্রবাসী মোতালেব কাজী।
কাজী মুরাদ উপজেলা পৌরসভা সদরের মৃত আতাহার আলী কাজীর ছেলে। আছমা খানম লাকী উপজেলার চরকালেখান ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য এবং চরকালেখান ইউনিয়নের আবুল হাসেম কাজীর ছেলে কুয়েত প্রবাসী মোতালেব কাজীর স্ত্রী। বর্তমানে তিনি কুয়েতে রয়েছেন। উপজেলার ষোলঘর গ্রামের আকতার খানের মেয়ে আছমা খানম লাকী।
কুয়েত প্রবাসী মোতালেব কাজীর পিতা আবুল হাসেম কাজী জানান, সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর লাকী তার দুই সন্তান রেখে প্রেমিক কাজী মুরাদের সাথে পালিয়ে যায়। বড় সন্তান ছেলে রয়েছে আমাদের কাছে। ছোট মেয়ে লাকীর কাছে। এরপর আমার ছেলেকে তালাক দিয়ে মুরাদকে বিয়ে করে। পরদিন ১৭ নভেম্বর লাকী আমার বাড়িতে আসলে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বাড়ির লোকজন। এখন আমরা নাতীকে নিয়ে আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আমার ছেলেও হুমকি-ধামকির কারনে দেশে আসতে পারছে না। দেশে আসলে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ইতিপূর্বে দেশে আসার পর কারনে-অকারনে আমার ছেলেকে মুরাদের সন্ত্রাসী বাহিনী বেদম মারধর করে। বিষয়টি বুঝতে পেরেও দুই শিশু সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে আমরা সবাই নিশ্চুপ ছিলাম। কিন্তু এখন তারা বিয়ে করেছে সেখানে আমাদের সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। আমার ছেলেও আমাকে নির্দেশ দিয়েছে লাকীকে কোনভাবে যেন ঘরে জায়গা না দেই।
তিনি আরো জানান, গত ১৬ নভেম্বর লাকী তার প্রেমিক মুরাদের সাথে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার ছেলের পাঠানো নগদ ২০ লাখ টাকা ও ৪ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এছাড়া তাদের প্রেমের সম্পর্কের সময় লাকীর মাধ্যমে ১২ বছরে আমার ছেলের উপার্জিত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুরাদ। লাকীর অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে আমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। আমার নাতী ঘর থেকে বের হয় না। সে শিশু হলেও মায়ের এ সম্পর্ককে মেনে নেয়নি। এমনকি সর্বশেষ লাকী যেদিন বাড়িতে এসেছিল তার সাথে আমার নাতী দেখাও করেনি। এ ঘটনার জন্য আবুল হাসেম অভিযুক্ত লাকী ও মুরাদের বিচার দাবি করেন। তানা হলে এভাবে একের পর এক সংসার ভেঙ্গে গিয়ে ওই পরিবারের সন্তানরা সামাজিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হবে।
গ্রামবাসী জানান, বর্তমানে লাকী তার পিতার বাড়িতে রয়েছেন। তার সাথে ছোট মেয়ে আছে। ওই মেয়েকেও তাদের কাছে নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন আবুল কাসেম। তানা হলে তারা শিশুটিকে মেরে ফেলতে পারে বলে আশংকা করছেন কাসেম। আবুল কাসেম দাবি করেন আমার ছেলের সাথে ১৭ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় লাকীর। এ ১৭ বছরের মধ্যে ৭ বছরের অধিক সময় ধরে মুরাদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল লাকীর। কিন্তু তা আমরা জানতে পারিনি। ৪ থেকে ৫ বছর পূর্বে জানলেও নাতীদের কথা চিন্তা করে আমরা তাকে বুঝিয়ে ওই পথ থেকে সরে আসতে বলি। কিন্তু সে তার প্রেমে অটল থাকে। এ কারনে আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসলে তার সাথে ভালো আচরন পর্যন্ত করতো না লাকী। এভাবে দীর্ঘদিন চলার পর মুরাদের বুদ্ধিতে লাকী মেম্বর প্রার্থী হয়। সেখানে আমার ছেলের পাঠানো টাকা দিয়ে সে নির্বাচন করে মেম্বর হয়। মেম্বর হওয়ার পর তার শক্তি আরো বেড়ে যায়। লাকী আমাদের কোন তোয়াক্কাই করতো না। মুরাদ ও মেম্বর এ দুই শক্তি নিয়ে আমাদের সাথে সবসময় খারাপ আচরন করতো। কিন্তু লাকীকে যে তালাক দেবে সে সাহসও ছিল না আমার ছেলের।
এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু সভাপতি এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানায়নি। সভাপতি সাংগঠনিক পদক্ষেপ নিতে বললে আমি অগ্রসর হতে পারি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাত বলেন, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এখন তারা বিয়ে করেছে। তাছাড়া আমি (সভাপতি) মেয়ের সাথে কথা বলেছি সে জানিয়েছে কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই। এ কারনে সাংগঠনিক কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। একটি সংসার ভেঙ্গেছে এটি কি অপরাধ নয়। এ প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে মোবাইলের লাইনটি কেটে দেন সভাপতি সুমন।
মুলাদী সদর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী হারুন অর রশিদ জানান, ১৭ নভেম্বর রাতে কাজী মুরাদ হোসেন ও আছমা খানম লাকী বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে আমার কাছে আসে। কিন্তু আমি বিয়ে না পড়িয়ে বরিশালের আইনজীবী (নোটারী পাবলিক) সৈয়দ আবুল খায়ের মো. শফিউল্লাহর নিকট পাঠাই। সেখানে লাকী প্রথমে তার স্বামীকে তালাক দেন। পরে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে লাকী ও মুরাদের বিয়ে হয়। আইনজীবী সৈয়দ আবুল খায়ের মো. শফিউল্লাহ রেজিস্ট্রি খাতা না দেখে বিষয়টি বলতে পারবেন না বলে জানান এ প্রতিনিধিকে। পরবর্তীতে তার চেম্বারে গেলে রেজিস্ট্রি খাতা বাসায় আছে বলে টালবাহানা করেন। সোমবার রেজিস্ট্রি খাতা দেখে জানাবেন বলে জানান।
মুলাদীর থানার ওসি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগ নেতা কাজী মুরাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাননি। তিনি বলেন, তারা দুইজনে বিয়ে করেছেন। যিনি অভিযোগ দেবেন তিনি তো তার স্ত্রী। এদিকে আবুল হাসেম দাবি করেছেন তিনি লাকীর বিরুদ্ধে নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন থানায়।
পরকিয়া প্রেম করে একটি পরিবারকে তছনছ করেছে এবং তাদের সন্তান ও আত্মীয়স্বজনদের সামাজিকভাবে হেয় করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মুলাদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুরাদ হোসেন বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমি যদি অপরাধ করি তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতো। আপনারা থানায় খোঁজ নেন। আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ হয়েছে কিনা। একটি চক্র রাজনৈতিকভাবে আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করার চক্রান্তে মেতেছে। আপনি আছমা খানম লাকীকে বিয়ে করেছেন। যার তথ্য প্রমান রয়েছে। এ প্রশ্নের জবাবে কাজী মুরাদের সরাসরি উত্তর আমি তাকে বিয়ে করিনি। অথচ ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন সেরনিয়াবাত স্বিকার করেছেন কাজী মুরাদ ও আছমা আক্তার লাকীর বিয়ে হয়েছে।
এ ব্যাপারে সরকারি কৌশলী কেএম জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, পরকিয়া প্রেম নিয়ে সরাসরি কোন আইন নেই। তবে আইনের ভাষায় পরকিয়াকে আমরা ব্যভিচারী বলে থাকি। সে ক্ষেত্রে কোন ছেলে যদি বিবাহিত মেয়েকে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে সে ক্ষেত্রে মেয়েটির স্বামী ওই ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারবে। এখানে মেয়ের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি নেই। মামলার এজাহারে তার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করতে হবে। এতে ছেলেটি দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত জেল হওয়ার বিধান রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com