প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ডিসেম্বরে ভার্চুয়াল বৈঠকে চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের বরাত দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)। তিনি বলেন, ভার্চুয়াল বৈঠকের সময় চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। তবে সমঝোতা চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়ান লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি)-এর আওতায় ইতিমধ্যে সম্পন্ন হওয়া কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করতে পারেন। দুই প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকটি ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ১৬ অথবা ১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।
ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার আগে আসন্ন বৈঠকের এজেন্ডা চূড়ান্ত করতে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন নয়াদিল্লি সফর করবেন। আমরা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ যে তাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিজয়ের মাসে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কারণ আমাদের বিজয় ভারতেরও বিজয়।’
গত সেপ্টেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ৬ষ্ঠ যৌথ পরামর্শ কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের প্রাক্কালে ড. মোমেন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর পরবর্তী বৈঠকে কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি গত বছরের ৫ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ সফর বাতিল করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্যাপনে যোগ দিতে ২৬ মার্চ সশরীরে এখানে সফরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তারা আমন্ত্রণটি নীতিগতভাবে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ও ভারত আগামী বছর একসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্যাপন করবে।’
এর আগে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে হাসিনা-মোদি শীর্ষ ভার্চুয়াল বৈঠককে এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সশরীরে সফরের বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে না।
বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে। উভয় দেশের নেতারা একে ‘সোনালি অধ্যায়’ ও ‘রক সলিড’ হিসেবে অভিহিত করছেন।
বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে ‘রক্তের সম্পর্ক’ হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের উন্নয়নই ভারতের উন্নয়ন। কিছুই এ (বাংলাদেশ-ভারত) সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না।’
নয়াদিল্লি ও ঢাকা অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত অনিষ্পন্ন ইস্যুতে আলোচনার জন্য চলতি বছরে মন্ত্রী-পর্যায়ে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক করবে বলে আশা করছে।
গত ৫ নভেম্বর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ সরবরাহের জন্য সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। দুই দেশ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও এয়ার বাবল অ্যারেঞ্জমেন্টের আওতায় বিমান যোগাযোগও স্থাপন করেছে।
Leave a Reply