নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে আরও তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে গত ১০ বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও তিনটি বিদ্যালয়। এবারের ভাঙনে বিলীন হওয়া বিদ্যালয়গুলো হলো- চরফলকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লুধুয়া ফলকন ফয়েজুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর জগবন্ধু মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে লুধুয়া ফলকন ফয়েজুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর জগবন্ধু মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আগেও ভাঙনের কবলে পড়ে স্থানান্তরিত হয়। তবে বেশি দিন স্থায়ী হতে পারেনি, ফের ভাঙনের কবলে পড়ে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরের মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে মতিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালতলি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর জগবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর-পশ্চিম চর জগবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য চর জগবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ-পূর্ব চর জগবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ-পূর্ব চর লরেন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম চর লরেন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর লরেন্স খানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর চরকালকিনি কে আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডিএস ফলকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে পড়ে বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। স্থানান্তরিত হওয়া এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে উত্তর চরকালকিনি আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালতলি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফের ভাঙনের মুখে রয়েছে। এ ছাড়া চর জগবন্ধু এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে মেঘনা নদী ধেয়ে আসছে। এবারের বর্ষা মৌসুমে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া চর জগবন্ধু মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থানান্তরের জন্য পাটারিরহাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রাজুসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচেষ্টায় ক্রয়কৃত জমিতে ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দ্রুত স্থানান্তরিত হবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া চর ফলকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আইয়ুবনগরের হাজী সিরাজুল ইসলাম আইয়ুবের দানকৃত জমিতে ও লুধুয়া ফলকন ফয়েজুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবু ছায়েদ দোলনের দানকৃত জমিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। কমলনগর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিগত সময়ে মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়া বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছে। এবারের ভাঙনের বিলীন হয়ে যাওয়া বিদ্যালয়গুলো স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে। প্রসঙ্গত লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মেঘনা নদী তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে চলছে ভাঙন। বছরের সব মৌসুমে অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ঘরবাড়ি, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি। ভাঙনের মুখে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বহু প্রতিষ্ঠান। এখনই ভাঙন ঠেকানো না গেলে মানচিত্র থেকে কমলনগর উপজেলা বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply