বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ যাত্রী যাওয়ার ব্যাপারে সৌদি আরব সরকারের পক্ষ থেকে এখনো সুখবর মেলেনি। গত ১ নভেম্বর বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা ওমরাহ পালনে যাওয়ার সুযোগ পেলেও কবে নাগাদ বাংলাদেশীরা ওমরায় যেতে পারবেন সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকেও সুনির্দিষ্ট কিছু জানাতে পারছে না। এতে ওমরাহ পালনে আগ্রহীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে নবনিযুক্ত ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ পালনে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে শুধু ওমরাহ-ই নয়, আগামী বছর হজের সময় কী হবে সেটিও এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত। তিনি বলেন, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে আগাম কিছু জানানো হয় না, তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে তবেই জানিয়ে দেয়। তখন নিশ্চিত করে সবকিছু বলা সম্ভব হয়। এখন পর্যন্ত তারা কিছুই জানায়নি। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিদ্ধান্ত হলেও বাংলাদেশীরা সীমিত আকারে ওমরাহ করতে যেতে পারবেন।
মহামারী করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সৌদি সরকার ওমরাহ পালন বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে সাত মাস ওমরাহ পালন বন্ধ থাকে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই গত ৩০ জুলাই শুধু ১০ হাজার সৌদির অধিবাসীকে পবিত্র হজ করার সুযোগ দেয়া হয়। এরপরও ওমরাহ পালন বন্ধ থাকে। সম্প্রতি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ৪ অক্টোবর থেকে সীমিত পরিসরে আবার ওমরাহ করার জন্য পবিত্র কাবাঘর উন্মুক্ত করে দেয় সৌদি সরকার। পর্যায়ক্রমে চারটি ধাপে ওমরাহ পালনের সুযোগ দেয়া হয়। প্রথম ধাপে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুধু সৌদি নাগরিকদের জন্য ওমরাহ পালনের সুযোগ দেয়া হয়। তবে মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৬০০০ হাজার ব্যক্তি ওমরাহ করার সুযোগ পান। দ্বিতীয় ধাপে ১৮ অক্টোবর থেকে ওমরাহকারীর সংখ্যা আরো বাড়ানো হয়। গ্র্যান্ড মসজিদের ধারণক্ষমতার ৭৫ শতাংশ খুলে দেয়া হয়। এতে প্রায় ১৫ হাজার ব্যক্তি ওমরায় অংশ নিতে পারছেন।
তৃতীয় ধাপে ১ নভেম্বর থেকে বিদেশীদেরর জন্য ওমরাহ করার সুযোগ উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে একেকবারে ২০ হাজার ব্যক্তি ওমরাহ করতে পারছেন। এতে দিনে মোট ৬০ হাজার মানুষ ওমরাহ করার সুযোগ পাচ্ছেন। চতুর্থ ধাপে যখন করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আর থাকবে না, তখন গ্র্যান্ড মসজিদের কর্মকাণ্ড আবারো স্বাভাবিকভাবে চলবে বলে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি এখনো থাকায় তৃতীয় ধাপে গত ১ নভেম্বর থেকেই মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, লেবানন, ওমান, সুদান, তিউনেশিয়া, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশ ওমরাহ কার্যক্রম শুরু করেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও কঠোর নীতিমালা মেনে ওমরায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন বিদেশীরা। এ দিকে পবিত্র ওমরাহ পালনের বিষয়ে বাংলাদেশী যাত্রীদের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও বাংলাদেশ সরকার ও এজেন্সিগুলো ওমরাহ কার্যক্রমের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। যেন সৌদি আরব থেকে ওমরাহ চালুর ঘোষণা আসার পর দ্রুত কাজ শুরু করা সম্ভব হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ ও ২৪ নভেম্বর দুই ধাপে মোট ২২৩টি বৈধ ওমরাহ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করে সরকার। ওমরায় যেতে না পারায় বাংলাদেশীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিষেশ করে গত বছর যারা হজে যেতে পারেননি তাদের অনেকেই এখন ওমরায় যেতে চান; কিন্তু সুযোগ না মেলায় হতাশায় দিন কাটছে তাদের।
Leave a Reply