বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় রাতের আঁধারে ইলেকট্রিক ড্রিল গ্রাউন্ডার কাটার মেশিন দিয়ে ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানের লোহার রড ও ভিম কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। জানাগেছে শুক্রবার ৪ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের ইন্দেরহাওলা গ্রামের নাসির সরদারের রাইস মিল সংলগ্ন রোকষ্ট প্রকল্পের এলজিইডির একটি ব্রিজের লোহার রড ও ভিম কেটে নেয়ার চেষ্টা করেছে কিছু লোক। ওই সময়ে ব্রিজের স্থানে জনতা একত্রিত হয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র সভাপতি মো. ফারুক হোসেন একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম খান সহ অজ্ঞাত ১০ জনের বিরুদ্ধে রড ও ভিম চুরির চেষ্টার অভিযোগ করেণ।
ঘটনার রাতে উপজেলার লবনসাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস.আই মো.আবু হানিফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকার উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেণ এবং ঘটনা স্থল থেকে আব্দুর রহিম ও আলী হোসেনের কথাবার্তার রেকর্ড করেণ। এব্যাপারে এস.আই মো.আবু হানিফ জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান,সেখানে উপস্থিত ইউপি সদস্য রাজু আহম্মেদ সহ স্থানীয় বেশ কয়েক জন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ঝুকিপূর্ণ ওই ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মৃধা ইন্দেরহাওলা গ্রামের রহিম খান নামের এক ব্যক্তিকে কন্টাক্ট দিয়েছেন। পরে তিনি বিষয়টি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
এব্যাপারে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান মৃধা জানান, ইন্দেরহাওলা সাইক্লোন সেল্টার সংলগ্ন নাসির সরদারে রাইস মিলের উত্তর পাশের ব্রিজটি (৬০ ফুট) সম্প্রতি বরিশাল এলজিইডি থেকে ৭৮,৭৮,৩৭৫ টাকা ব্যায়ে টেন্ডার দেওয়া হয়। বরিশালের মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ ব্রিজরে কাজ পেয়েছে। তিনি সম্প্রতি ঠিকাদারী ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য সাব-কন্টাক্ট নিয়েছেন এবং দু’এক দিনের মধ্যেই নির্মান কাজ শুরু করবেন বলেও জানান। এছাড়া তিনি ব্রিজটি ভেঙ্গে লোহার ভিম ও রড ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখার জন্য ইন্দেরহাওলা ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম খান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেনকে ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে দিয়েছেন বলে জানান।
বিদ্যুতের বিষয়ে জানাগেছে জনস্বার্থে ব্রিজ সংলগ্ন স্থান থেকেই লাইন টেনে রড ও ভিম অপসারণের কাজ করা শুরু করা হয়েছিলো। তবে স্থানীয়রা নতুন ব্রিজ পেয়ে যেমন উৎফুল্ল হয়েছেন তার পাশাপাশি অনেকটা নাখোশ হয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ওপরে। কেননা কোন প্রকার বিকল্প ব্যবস্থা না করে ৮টি গ্রামের মানুষের চলাচলের পুরাতন ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলাটাকে তারা অন্য কিছু ভাবছেন।
এব্যপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রত্যেক ইউনিয়নের টেন্ডার হওয়া পুরাতন ব্রিজের লোহার ভিম ও রড স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে রেজুলেশন করে দেয়া হয়েছে। যে ইউনিয়নে ব্রিজের ভিম ও রড সঠিক ভাবে পাওয়া যাবে না তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অপরদিকে সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এই ইউনিয়নের আরও ৫টি ব্রিজের লোহার রড ও ভিম একই চক্র কৌশলে গায়েব করেছে। তবে স্থানীয় একটি সূত্রে জানাগেছে একই ভাবে রেজুলেশনের মাধ্যমে ওই ৫টি ব্রিজের রড ও ভিম চুক্তির মাধ্যমে কেটে পরিষদে জমা দেয়া হয়েছিলো।
Leave a Reply