আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা, ভালবাসায় দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে নিজের জন্মস্থান আগৈলঝাড়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে পালিত হলো মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ৭৬তম জন্মদিন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রিয় নেতার জন্মদিনে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলে দলে নেতা-কর্মীরা ছুটে আসেন উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। এসময় দলীয় নেতা কর্মীরা তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা জাতির পিতার ভাগ্নে, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের সন্তান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর জন্মদিনে শুভেচ্ছা মিছিল করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈর সভাপতিত্বে দক্ষিনাঞ্চল তথা দেশের উন্নয়নের কিংবদন্তী দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক নেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বিস্তৃত কর্মময় জীবনী ও উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ লিটন সেরনিয়াবাত। পরে প্রিয় নেতার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা ফজলুল হক। দোয়া ও মোনাজোতে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম ছরোয়ার, আওয়ামী লীগ নেতা এসএম হেমায়েত উদ্দিন, পিয়ারা ফারুক বক্তিয়ার, আব্দুস ছাত্তার মোল্লা, আবুল বাশার হাওলাদার, মলিনা রানী রায়, রফিকুল ইসলাম তালুকদার, কৃষকলীগ সাধারণ সম্পাদক রমনী কান্ত সরকার, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী, যুবলীগ সভাপতি সাইদুল সরদার, সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ মন্ডল, ছাত্রলীগ সভাপতি মিন্টু সেরনিয়াবাতসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদদ্যবৃন্দ ছাড়াও ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল ইসলাম সাগর সেরনিয়াবাত উপজেলার অর্ধশতাধিক মসজিদ ও বিভিন্ন এতিমখানায় মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া-মিলাদের আয়োজন করে।
জন্ম পরিচয়ঃ- আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ১৯৪৪ সালের ১০ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও আমেনা বেগমের প্রথম সন্তান হিসেবে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা আওয়ামী লীগ সাবেক নেতা এবং বন্যা, সেচ, পানি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে হত্যা করে ঘাতকেরা। একই সাথে সেদিন তার মা ও সহদরকেও হত্যা করেছিল স্বাধীনতা বিরোধীতাকারীরা। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো বড় ভাই।
কর্মজীবনঃ- আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ১৯৭১সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে দক্ষিনাঞ্চলীয় মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে বরিশাল উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি অধুনালুপ্ত বরিশাল পৌরসভারও চেয়ারম্যান ছিলেন। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসন থেকে পর পর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২৬ জুন ২০০০ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হন। হাসনাত আবদুল্লাহ ১৯৯৬ থেকে ২০০০ পর্যন্ত জাতীয় সংসদের চীফ হুইপের দ্বায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অশান্ত পার্বত্য জেলায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। যা “পার্বত্য শান্তি চুক্তি” হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে পরিচিতি করেছে। ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি সরকারের মন্ত্রী পদমর্যাদায় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষণ কমিটির জাতীয় কমিটির আহবায়ক মনোনীত হয়ে কাজ করছেন। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ দশম জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারী সংসদ সদস্য হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করেন। জাতীয় সংসদের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)র অন্যতম সদস্য হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করছেন আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। রাষ্ট্রিয় দ্বায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বর্নাঢ্য রাজনৈতিক নেতা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের দ্বায়িত্ব পালন করে দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন করে আসছেন।
Leave a Reply